বরেণ্য এ অধ্যাপক তার বাবার কবর জিয়ারত ও স্মরণসভায় অংশ নিতে শুক্রবার সকালে সপরিবারে পিরোজপুর পৌঁছেন। তার সঙ্গে তার ছোট ভাই জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট আহসান হাবিব, বড় বোন সুফিয়া হায়দার ও তাদের দু’ভাইয়ের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যারা রয়েছেন। তিনি বলেন, শুধু আমার বাবাকে স্মরণ নয়, মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রত্যককেই স্মরণ করতে হবে এবং তাদের মহান আত্মত্যাগের কাহিনী তোমাদের জানতে হবে। পিরোজপুরে তার বাবা শহীদ ফয়জুর রহমান শুয়ে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য পিরোজপুরকে তার নিজের জেলা মনে করেন। পিরোজপুরের সড়কগুলোকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করায় তিনি অভিভূত হয়েছেন বলেও জানান।
স্মরণসভায় তিনি শহর ও শহরতলির বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নিজের স্বাক্ষরিত বই প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিরোজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এস এম সোহরাব হোসেন। বক্তব্য রাখেন জাফর ইকবালের সহধর্মিনী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এডভোকেট এম এ মান্নান, জাফর ইকবালের বোন সুফিয়া হায়দার, ভাই কার্টুনিষ্ট আহসান হাবীব শাহীন, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম চৌধুরী ও এম এ রব্বানী ফিরোজ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন গণ উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক জিয়াউল আহসান।
ড. জাফর ইকবাল গতকাল সকালে লঞ্চ থেকে পিরোজপুর নেমে প্রথমেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাবার কবর জিয়ারত ও দোয়া করতে যান। এরপর বলেশ্বর ঘাটের শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে খেয়া নৌকায় বলেশ্বর নদের উত্তর দিকে নিমার খালের মাথায়, যেখানে তার বাবার লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে যান। তার পিতা ফয়জুর রহমান আহমেদ স্বাধীনতা পুর্ব তৎকালিন পিরোজপুর মহাকুমা পুলিশ প্রধান ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৫ মে ফয়জুর রহমানকে পাকহানাদার বাহিনী পিরোজপুর শহরের বলেশ্বর নদের তীরে গুলি করে ও বেওনেট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে লাশ নদে ফেলে দেয়।