অগ্রসর রিপোর্ট : গাজায় ইসরায়েলি বর্বতার হাত থেকে নিজের কর্মীদের রক্ষা করতে পারেনি বলে জাতিসংঘের প্রতি ভর্ৎসনা করেছেন তুর্কিয়ে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ গঠিত হয়েছে তা পূরণ করতে পারছে না বৈশ্বিক এ সংস্থাটি।
সোমবার বিকেলে তুর্কিয়ের রাজধানী ইস্তাম্বুলে ওআইসির অর্থনৈতিক ফোরামের স্থায়ী কমিটির ৩৯তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন এরদোগান।
তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘ নিজের কর্মীদেরও ইসরাইলের বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে পারছে না। তবে জাতিংসঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এরদোগান। বিপরীতে নিরাপত্তা পরিষদের বিরোধীতার জন্য আক্ষেপ করে বলেন, মাত্র কয়েকটি দেশের জন্য বিশ্বের অধিকাংশ দেশের চাওয়া আটকে যাচ্ছে।
গাজায় শহীদদের প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজন নারী ও শিশু উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পক্ষগুলো মানবাধিকারের কথা বললেও গাজায় তা ভয়াভহভাবে লঙ্ঘন করছে ইসরায়েল। বিশ্বেনেতাদের নির্লিপ্ততায় গাজা ভূখণ্ডে গণহত্যা চালানো হচ্ছে।
নেতানিয়াহুকে খুনী ও চোর আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী নীতির বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মুসলিম নেতাদের সতর্ক করে এরদোগান বলেন, ইসরায়েল তার সম্প্রসারণবাদী নীতি অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়াতে পারে। সুতরাং সব মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তুর্কিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজা একটি ফিলিস্তিনি ভূমি এবং চিরকাল থাকবে। আজকে গাজা এবং ফিলিস্তিনকে রক্ষা করার অর্থ জেরুজালেম, মক্কা, মদিনা, ইস্তাম্বুল, দামেস্ক, বৈরুত, বাগদাদ এবং অন্যান্য মুসলিম অঞ্চলকে রক্ষা করা। মুসলিম বিশ্ব হিসেবে আমাদের কর্তব্য হল গাজার এক ইঞ্চি জমিও ইসরায়েলকে আক্রমণ করার জন্য ছেড়ে না দেওয়া। এটা শুধু আমাদের গাজান, ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের জন্য নয়, আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য।
মুসলিম নেতাদের স্মরণ করিয়ে এরদোগান বলেন, ওআইসি গঠন হয়েছিল স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে। কিন্তু আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। আমরা যদি এশিয়া থেকে আফ্রিকা, ইউরোপ থেকে আমেরিকা পর্যন্ত ২ বিলিয়ন মানুষ ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে কেউ আমাদের হুমকি দিতে পারবে না।
তুর্কিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে অথবা আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমরা দৃঢ়তার সাথে যেকোনো ঘৃণামূলক অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব। ফিলিস্তিনের মানুষের বাঁচার অধিকার ও ভূখণ্ডের অধিকার আদায়ে বিশ্বমঞ্চে আমাদের কন্ঠ সব সময় জোরালো রাখব। ‘খুনী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’ বলেন এরদোগান।