অগ্রসর রিপোর্ট: গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধ কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনির শ্বাসনালি ও এক কান পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইউব হোসেন। তিনি এও জানিয়েছেন, রনির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। তাকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এই চিকিৎসক শনিবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘রনির শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার শারীরিক অবস্থা জানতে চেয়ে কলকাতা থেকেও প্রচুর ফোন আসছে। রনিকে সুস্থ করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
শুক্রবার বিকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে গিয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে দগ্ধ হন ‘মীরাক্কেল’ খ্যাত কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি। রনি ছাড়াও ওই দুর্ঘটনায় দগ্ধ হন আরও চারজন। তারা হলেন- মোশাররফ হোসেন, পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, ইমরান হোসেন ও রুবেল হোসেন।
দুর্ঘটনার পর দগ্ধদের প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে রনি, মোশাররফ হোসেন ও জিল্লুর রহমানকে নেওয়া হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
এর মধ্যে মোশাররফ হোসেন ও জিল্লুর রহমানের শরীরের ২০ শতাংশ দগ্ধ হন বলে জানান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইউব হোসেন। এ ঘটনায় রনির মতো জিল্লুর রহমানকেও রাখা হয়েছে আইসিইউতে।
যেভাবে ঘটে দুর্ঘটনা
জিএমপির সহকারী কমিশনার (ডিবি ও মিডিয়া) আবু সায়েম নয়নের বয়ান থেকে জানা যায়, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নাগরিক সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয় শুক্রবার বিকালে। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং প্রধান বক্তা ছিলেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে তাকে উদ্বোধন মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার হাতে বেশ কিছু গ্যাস বেলুন দেওয়া হয় উড়ানোর জন্য। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও সেই বেলুন উড়াতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন তিনি।
পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেই বেলুনগুলো মঞ্চের পাশে নিয়ে যান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানের মূলমঞ্চে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ অন্যরা বেলুনে আগুন লাগিয়ে উড়ানোর চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে।
এ ঘটনায় পাশে বসে থাকা আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। পুলিশ সদস্যরা তাদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নেভান এবং দ্রুত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রনি, মোশাররফ ও জিল্লুরকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।