অগ্রসর রিপোর্ট :জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার নেপথ্য ষড়যন্ত্রকারীদের বের হয়ে আসাটা কেবল সময়ের ব্যাপার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র প্রস্তুতকারীরাও সমান দোষী সেটা ভুললে চলবে না। এই হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে এবং যারা পাশে ছিল, ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে সবাই কিন্তু সমানভাবে দোষী।’
সোমবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে জাতির পিতার ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করাটা জরুরি ছিল সেটা করেছি এবং কারা জড়িত ছিল একদিন সেটাও বের হবে, সেদিনও খুব বেশি দেরি নয়।’
তিনি বলেন, ‘তখনকার পত্র-পত্রিকাগুলো পড়লেই অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। একটা বিধ্বস্ত দেশ গড়তে যেখানে বছরের পর বছর লেগে যায়, সেখানে একটি বছরও সময় দেওয়া হলো না। সাথে সাথে সমালোচনা শুরু হলো। ধৈর্য্য না ধরে নানা সমালোচনা, নানা কথা লেখা হলো। কারা এগুলো লিখেছিল, কাদের খুশি করতে এবং এই হত্যাকাণ্ডের জন্য গ্রাউন্ড প্রিপেয়ার কারা করছিল?’
আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক-রশিদের বিবিসিতে প্রদত্ত ইন্টারভিউয়ের উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে এবং যারা পাশে ছিল ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে সবাই কিন্তু সমানভাবে দোষী।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা জিনিস চিন্তা করেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা দেশে ফেরেন এবং সেই ’৭২ সাল থেকেই এদেশে ষড়যন্ত্র শুরু। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি হলো, জাসদ সৃষ্টি হলো, পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর দোসরা যারা এদেশে থেকে গিয়েছিল সব আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির সঙ্গে মিশে গেল।’
তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করাটা জরুরি ছিল সেটা করেছি এবং কারা জড়িত ছিল একদিন সেটাও বের হবে। সেদিনও খুব বেশি দেরি নয়। তবে, আমার একটাই লক্ষ্য ছিল আমি সবসময় বলেছি বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা এবং উন্নত জীবনের ব্যবস্থা, যেটা জাতির পিতার আজীবন লালিত স্বপ্ন। সেই ব্যবস্থা যখন করতে পারব সেদিনই আমি মনেকরি এই হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ নিতে পারব।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে ’৭৫ এর ১৫ আগস্টে শহিদ জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং তাদের পরিবারের শাহাদতবরণকারি সদস্যদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মরণ সভায় শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রমুখ।
আরও বক্তৃতা করেন মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কোচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি গণভবন থেকে সভাটি সঞ্চালনা করেন।