অগ্রসর রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের কবল থেকে দেশবাসীর মুক্তি লাভের দৃঢ় আশাবাদ পুণর্ব্যক্ত করে বলেছেন, তাঁর সরকারের নেতৃত্বে দেশ আবারো সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস যদিও আমাদের সকল অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে। তবে, আমি আশা করি, জনগণ এরথেকে মুক্তি পাবে এবং আবার আমরা এগিয়ে যাব।’
দেশ, জাতির জন্য কাজ করা ও কল্যাণ করা, যেকোন প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা এবং সৎপথে থাকার বিষয়টি তাঁকে জাতির পিতাই শিখিয়ে গেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন। কাজেই, তাঁর আদর্শেই দেশকে গড়তে চাই ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। ইনশাল্লাহ এই বাংলাদেশ একদিন ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত হবে।’
‘করোনা ভাইরাস সমস্যাটি কেবল বাংলাদেশের একার নয়, সমগ্র বিশ্বেরই সমস্যা,’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এ সময় দেশবাসীসহ সমগ্র বিশ্বের জনগণ যেন এর কবল থেকে মুক্ত হতে পারে সেজন্য ও মহান আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন চত্বরে তিনটি গাছের চারা রোপণ করে মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারাদেশে ১ কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে একথা বলেন।
তিনি তেঁতুল, ছাতিয়ান এবং চালতা গাছের তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন এবং একইসঙ্গে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপন কর্মসূচি ২০২০-এরও উদ্বোধন করেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পরিবেশ ও বন সচিব জিয়াউল হাসান এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
ওয়ান ইলাভেনের প্রেক্ষাপটে দিনটি ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ হওয়ায় তিনি দেশবাসীকে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপনের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তাঁকে সে সময় কারাগারের নাগপাশ থেকে মুক্ত করে আনার জন্য সমগ্র দেশবাসীসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং তাঁর সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
তৎকালিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজস্ব বাসভবন ধানমন্ডীর সুধা সদন থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করায় দিনটিকে সেই থেকে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনটি একটি বিশেষ দিন, কারণ, ২০০৭ সালে তদানিন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেফতার করেছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, আমার বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, প্রবাসী এবং বিশ্বনেতাদের প্রতি। সেইসাাথে আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের সংগঠন বিশেষ করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সকল সহযোগী সংগঠনের প্রতি, কারণ তাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন।’
তিনি এ সময় তাঁর মুক্তির জন্য দেশব্যাপী সৃষ্ট গণদাবির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে সে সময়কার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যালয়ে পাঠিয়েছিল। তাঁদের সই সমর্থন পেয়েছিলাম বলেই জাতীয় এবং আর্ন্তর্জাতিক চাপে আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। যদিও আমার বিরুদ্ধে বিএনপি’র আমলে ১২টি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৫টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।’
তিনি এসব মামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রতিটি মামলার বিষয়ে আমি বলেছি, তদন্ত করে দেখতে হবে- আমি দুর্নীতি করেছি কিনা। ঠিক সেটাই করা হয়েছে এবং আল্লাহর রহমতে সবগুলো থেকেই আমি খালাস পেয়েছি।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জনগণের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা কারণ তাঁদের অকুন্ঠ সমর্থনেই আমি মুক্তি পেয়েছিলাম।’