অগ্রসর রিপোর্ট : ভুলক্রমে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রে তেহরানে ইউক্রেনের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ইরান। এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে তেহরান। শনিবার সকালে এক বিবৃতিতে ইরানের জেনারেল স্টাফ এ তথ্য জানিয়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে তেহরানের অদূরে ইউক্রেনের যে যাত্রীবাহী বিমানটি ভূপাতিত হয়েছে একটি স্পর্শকাতর সামরিক স্থাপনার নিকটবর্তী হওয়ার পর মানবীয় ত্রুটির কারণে শত্রুর জঙ্গিবিমান ভেবে সেটিতে গুলি চালানো হয়েছে।
গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভোররাতে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন বিমান তেহরানের ইমাম খামেনী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এটির ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন- ইরানের ৮২ জন, কানাডার ৬৩ জন, ইউক্রেনের ১১ জন (ক্রু সহ), সুইডেনের ১০ জন, আফগানিস্তানের ৪ জন, ব্রিটেনের ৩ জন এবং জার্মানির ৩ জন।
একই দিনে ইরাকের বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালায় ইরান। এই ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে হামলার আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে তেহরানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি হামলার শিকার হয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তেহরানে ইউক্রেনের দূতাবাস জানায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে তার কিছুক্ষণ পরই ইউক্রেন সরকার প্রধান এই ঘটনায় হামলার সন্দেহ করেন। পরে ইউক্রেনের দূতাবাসও বিবৃতি তুলে নেয়। ইরানও বিমানটিতে কোনো প্রকার হামলার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে।
পরে ইরান বিধ্বস্ত বিমানের ব্লাকবক্স ইউক্রেন ও বোয়িংকে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা এই ঘটনার নিজস্ব তদন্তের ঘোষণা দেয়। তবে ঘটনার একদিন পরই বিমানটি হামলার শিকার হয়েছে বলে জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, ভুল করে এটি হয়ে থাকতে পারে।
এরপরই ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় বিমানটি ধ্বংস হয়েছে- এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাতেই অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে বিমানটি হামলার শিকার হয়েছিল। অবশেষে ইরান ওই ঘটনাকে মানবীয় ভুল হিসেবে উল্লেখ করল।