দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমি এ কথা জানিয়েছেন। জেমস কোমির এক চিঠির বরাত দিয়ে রবিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসকে লেখা চিঠিতে কোমি বলেছেন, সংস্থাটি ইমেইল পর্যালোচনা শেষে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পায়নি।
চিঠিতে কোমি আরো বলেন, ক্লিনটনের বিষয়ে জুলাইয়ে আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলাম, তার পরিবর্তন হয়নি।
এর আগে গত জুলাইতে এফবিআই পরিচালক বলেছিলেন, হিলারি ক্লিনটন অসতর্ক ছিলেন। তবে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় নিজের ব্যক্তিগত ইমেইলে স্পর্শকাতর জিনিসপত্র রাখার ক্ষেত্রে কোনো অপরাধ করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকতে হিলারির ইমেইলের বিষয়ে এফবিআই নতুন করে তদন্ত শুরু করলে এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়।
এফবিআই পরিচালক কোমি বলেছিলেন, নতুন করে পাওয়া ইমেইল বার্তার মধ্যে গোপনীয় কোনো তথ্য আছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখবেন তারা। এর ফলে জনমত জরিপে হিলারির চেয়ে পিছিয়ে থাকা রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। লড়াইয়ে টিকে থাকার নতুন রসদ হাতে পান তিনি।
চিঠিতে কোমি বলেন, সংক্ষিপ্ত সময়ে উচ্চ মানের বিশাল কাজ শেষ করায় আমি এফবিআইয়ের পেশাজীবীদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
এই খবরের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় থাকা ক্লিনটনের জনসংযোগ পরিচালক জেনিফার পালমিয়েরি সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত।
তবে এই খবর বের হওয়ার পরও ট্রাম্প মিনেপলিসের সমাবেশে বিষয়টির উল্লেখ না করে ক্লিনটনকে নিয়ে যথারীতি তার ধরাবাঁধা বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, হিলারি ক্লিনটন অনেক লম্বা সময় ধরে তদন্তের মুখে থাকবে। আর সঙ্গে সঙ্গে সামনে থেকে সমবেত স্লোগান উঠে, ‘তাকে জেলে ভরো’।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, যৌন কেলেঙ্কারির জন্য অভিযুক্ত সাবেক কংগ্রেসম্যান অ্যান্থনি উইনারের ঘরে কম্পিউটারে তল্লাশি চালানোর সময় এফবিআই সন্দেহজনক ই-মেইলের খোঁজ পায়। উইনারের সাবেক স্ত্রী হুমা আবেদিন হিলারি ক্লিনটনের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত সহকারী।
নতুন করে পাওয়া ওই ই-মেইলের কথা উল্লেখ করে গত ২৮ অক্টোবর জেমস কোমি বহুল প্রচারিত এক চিঠিতে আইনপ্রণেতাদের বলেছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি সরকারি সার্ভারের বদলে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহারের সময় কোনো ‘গোপনীয়’ তথ্য চালাচালি করেছিলেন কি না, তা নিয়ে এফবিআই নতুন করে তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে। হঠাৎ ফাটানো এফবিআইয়ের ওই বোমায় বেকায়দায় পড়েন হিলারি ক্লিনটন।
তবে আত্মবিশ্বাসী হিলারি জানিয়েছিলেন, যতই তদন্ত করা হোক, খারাপ কিছুই পাওয়া যাবে না। বরং ভোটের মাত্র ১০ দিন আগে এমন একটি সিদ্ধান্ত কেন নেয়া হলো, তার ব্যাখ্যা চান এফবিআইয়ের কাছে।
একের পর এক যৌন হয়রানির অভিযোগের মুখে ডুবতে থাকা রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এফবিআইয়ের সরবরাহ করা ওই নতুন রসদ লুফে নেন।