স্টাফ রিপোর্টার: সিরিয়ায় দেশব্যাপী ‘বৈরিতার অবসানে’ সম্মত হয়েছে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো। এক সপ্তাহের মধ্যে এই অস্ত্রবিরতি কার্যকর হতে পারে বলে নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তবে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-নুসরা ফ্রন্টের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান এই অস্ত্রবিরতির আওতায় পড়বে না।
আন্তর্জাতিক সিরিয়া সাপোর্ট গ্রুপের মন্ত্রীরা ত্রাণ সরবরাহ জোরদার করতেও একমত হয়েছে।
সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশে রাশিয়ার বিমান হামলার সহায়তায় দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান জোরদার করার প্রেক্ষাপটে শক্তিধর দেশগুলোর এ সম্মতির কথা প্রকাশ করা হয়েছে।
জার্মানির মিউনিখে দীর্ঘ বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি কার্যকরের ব্যাপারে সম্মত হয়।
সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি কার্যকর হলে তা সত্যিকারের শান্তি আলোচনা ফের শুরুর ক্ষেত্রে একটি সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মিউনিখে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি অস্ত্রবিরতির পরিকল্পনাটি উচ্চাভিলাষী বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতির প্রতি পক্ষগুলো সম্মান দেখায় কি না, সেটাই হবে সত্যিকারের পরীক্ষা।
তিনি বলেন, ‘এখানে যা হয়েছে তা কেবল কাগজে-কলমে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মাঠে এর কার্যক্রম আমরা দেখতে পাবো।’
সিরিয়ার বিবদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অস্ত্রবিরতি কার্যকরের ব্যাপারে একটি টাস্ক ফোর্স কাজ করবে। ওই টাস্ক ফোর্সে নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে ত্রাণ সাহায্য শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও সিরিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফান দ্য মিসতুরাকে সঙ্গে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কেরি প্রভাবশালী দেশগুলোর সম্মতির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বশক্তি এমন একটি পরিকল্পনার ব্যাপারে একমত হয়েছে, যা সিরিয়ার জনগণের দৈনন্দিন জীবন বদলে দিতে পারে।
কেরি বলেন, ‘আজ মিউনিখে মানবিক উন্নয়ন ও বৈরিতার অবসানে উভয় দিকে আমরা অগ্রগতি অর্জন করেছি বলে বিশ্বাস করি।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশজুড়ে (সিরিয়া) বৈরিতায় অবসানে সম্মত হয়েছি।’
ল্যাভরভ বলেন, ‘আজ আমরা একটা বিরাট কাজ করেছি বলে আশা করি।’
সংবাদ সম্মেলনে কেরি আবারো বলেছেন, রাশিয়া সিরিয়ায় মধ্যপন্থী বিরোধী বাহিনীকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে মস্কোর দাবি, তারা কেবল সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, রাশিয়া বিমান হামলা বন্ধ করলেই কেবল অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে। তবে ল্যাভরভ বলেছেন, হামলা অব্যাহত থাকবে।
সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রায় পাঁচ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। এই সংখ্যা জাতিসংঘ ঘোষিত সংখ্যার দ্বিগুণ। এর বাইরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৪৫ শতাংশ সিরীয়।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।