একসময়ে ১৯৩০ দশকের নকশা বেশ পছন্দ ছিল তার। সেসময় যে কাপড়টাই পরতেন তিনি সেটাই সেই আগের যুগের মতন দেখতে হত। তবে সেই পোশাকে গোলাপী, হলুদ, নীল- সব রঙকেই ব্যবহার করতেন তিনি। কিন্তু সে বাতিক তার খুব বেশিদিন টেকেনি। আর এরপর তিনি ধরেন এই সবুজপ্রীতি। আর সেই যে একবার সবুজ রঙকে ভালোবেসেছেন এলিজাবেথ, তারপর থেকে একটাদিনও বিরক্ত হননি তিনি। প্রতিটাদিন সবুজ রঙকে নিয়েই সময কাটিয়েছেন।
সবুজ রঙকে পৃথিবীর সবচাইতে ইতিবাচক রঙ মনে করেন এলিজাবেথ। নোভা স্কশিয়াতে বড় হয়েছেন তিনি। সেখানে থাকতে সব ধরণের রংকেই ব্যবহার করেছেন। তখন কোন সমস্যাই হয়নি তার। সবুজের প্রতি কেন, আর কোন রঙয়ের প্রতিই আলাদা কোন ভালোবাসা বা টান সৃষ্টি হয়নি। এলিজাবেথ মনে করেন নোভা স্কশিয়াতে এত বেশি সবুজ ছিল যে সবুজ রঙকে আলাদা করে অনুভব করার সুযোগ পাননি তিনি। কিন্তু নিউইয়র্কে আসবার পর সবুজ রঙকে বড্ড অনুভব করতে থাকেন তিনি। কোথাও যেন কিছু একটা নেই বলে মনে হচ্ছিল তার। আর সেই থেকেই এই সবুজ রঙ ব্যবহার করা। এর মানে এই নয় যে এটা তার কোন মোহ বা ঘোর। ভালোবাসেন বলেই গত বিশ বছর ধরে সবুজ রঙকে নিজের করে নিয়েছেন এলিজাবেথ।
সবুজ রঙ দেখলেই মন খুশি হয়ে যায় এলিজাবেথের। শুধু তার নয়, সবারই এমনটা হয় বলে মনে করেন তিনি। এমনকি অন্যরা এলিজাবেথকে দেখলে তাদের মনটাও ভালো হয়ে যায় বলে ভাবেন এলিজাবেথ। বিশেষ করে শিশুরাতো এই সবুজ রঙয়ের বিষয়টাকে খুবই পছন্দ করে।
স্ত্রীর এই সবুজের প্রতি ভালোবাসাকে নিয়ে বেশ উৎসাহী ছিলেন এলিজাবেথের স্বামী ডিলানও। এলিজাবেথকে দেখলেই শিশু থেকে বুড়ো- সবাই হাত নাড়িয়ে ভালোবাসা জানায়, মিস গ্রীন বলে ডাকে আর এগিয়ে যেতে বলে। তবে তাই বলে বিশটা বছর ধরে সবুজ রঙকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াটা কিন্তু মোটেও সহজ কোন কাজ না। তবু চেষ্টা করেন তিনি সবুজ রঙয়ের প্রসাধনী আর ব্যবহার্য খুঁজে বের করার।সবুজ রঙের মোট ৩০টি জুতো আছে এলিজাবেথের। এছাড়াও সবুজ রঙতো পাওয়াই যায়। রঙ না পেলে সবুজ ডাই দিয়ে কোন জিনিসকে সবুজ করে নেন তিনি। প্রতিদিন একপাত্র সবুজ রঙ তৈরি হয় তার বাসায়। অন্তর্বাস থেকে শুরু করে মাথার ছোট্ট প্রজাপতি ক্লিপটাকেও সবুজ করেন এলিজাবেথ।
এলিজাবেথের বাড়িটার বেশিরভাগটাও সবুজ রঙয়ের। সদর দরজা থেকে শুরু করে বাইরের বাগানটা- সবটাতেই সবুজ রয়েছে। এছাড়া সবুজ রঙয়ের তৈজসপত্রতো আছেই। কখনো কি সবুজ রঙ দেখে বিরক্ত লাগেনা তার? একঘেয়ে মনে হয়না? ন! এক কথায় বলে দেন ৭৫ বছর বয়সী এই নারী। সেইসাথে দৃঢ় কন্ঠে হাসিমুখে জানান- ঘুমানোর সময়ে চারপাশে সবুজ রঙ না থাকলে ঘুম আসে না তার।
তথ্যসূত্র- The Green Lady of Brooklyn: ny times