এম এম জামান ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: শেরপুরে মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকাস্থ খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার পীরের দরবারে ওই ঘটনা ঘটে। এতে হামলাকারী ও হামলার শিকার উভয় পক্ষের অন্তত শতাধিক জন আহত হয়েছেন। একইসাথে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।এতে পীরের অনুসারীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ঘৃণা এবং ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলামসহ ২৫ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫শ জনকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন দরবার শরীফের খাদেম মোঃমাসুম।মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরীফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের জামতলা এলাকার ফারাজিয়া আল আরাবিয়া ক্বওমী মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, স্থানীয় মো. খোরশেদ, মো. মজিবুর, মো. শহিদুলসহ অহাবী দলের একটি অংশ। তাদের অভিযোগ, পীরের দরবারে ইসলাম পরিপন্থী কার্যকলাপ পরিচালিত হয়। তাই দরবার বন্ধের দাবিতে এর আগেও মাদ্রাসা ও লছমনপুর এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি-বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।কিন্তু এলাকার সাধারণ মুসুল্লিদের সাথে কথা বলে জানা যায়,এখানে সম্পুর্ণ ইসলামি আইন ও বিধিমালা মেনেই তরিকা প্রচার করা হয়।এরই ধারাবাহিকতায় আজ মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, স্থানীয় মো. খোরশেদ, মজিবরসহ হাজারো মানুষ মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা চালায়। এসময় তারা দরবারের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে লোহার দরজা জানালা,গরু, ভেরা,জাকেরদের জন্য থাকা চাল খাদ্য সামগ্রী ইত্যাদি লুটপাট করে নেয় এবং দরবারে অবস্থানরত ধর্মপ্রান মুসুল্লিদের উপর আক্রমণ করেন,,, এসময় দরবারে থাকা খাদেম ও অন্যান্য মুরিদরা বাধা দিলে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত শতাধিক জন আহত হন এবং একজন নিহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন,কিন্তু অহাবীপন্থীদের কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি,এতে দরবারে অবস্থানরত সকল মুসুল্লিগন দরবার ত্যাগ করেন। হামলাকারীদের মধ্যে আহতরা হচ্ছেন আসিফ (২৫), শহিদুল ইসলাম (৩৫), আল মাসুদ (১৫), জিসান (২২) এনামুল হক (৩৫), হাফেজ (৩৯) ও জয়নাল (২৮)। এছাড়া মুর্শিদপুর দরবারের আহতরা হচ্ছেন আব্দুল কুদ্দুছ (৪০), মোহন মিয়া (৪০), মন্টু মিয়া (৪২), আরিফ হোসেন (১৬), মনির হোসেন (২৪) ও সফর মিয়া (৪৫) ও আরও অনেকেই।দরবারের খাদেম মো. মামুন অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা দীর্ঘদিন যাবত দরবার বন্ধের হুমকিসহ নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে তরিকুল ইসলাম, মজিবর, খোরশেদের নেতৃত্বে হাজারো লোক দরবারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। আমরা ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার চাই। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুবায়দুল আলম জানান, বর্তমানে মুর্শিদপুর দরবার এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এক পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।