রোজায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই এই সঠিক খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানেন না। ইফতারে একগাদা তৈলাক্ত ও মসলাদার খাবার খেয়ে পেটের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে থাকেন। যে কারণে খাবার খেলেও শরীরে পৌঁছে না প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তি। সেহরির খাবারও সঠিকভাবে খান না অনেকে। এর ফলে সারাদিন অনেক বেশি ক্লান্ত বোধ হতে থাকে। তাই রোজায় আপনার খাদ্যাভ্যাস কেমন হবে সে সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন এবং মেনে চলার চেষ্টা করুন-
১. সুষম খাবার খাওয়া
রোজায় সুষম খাদ্য রাখুন যাতে বিভিন্ন ধরনের ফল, শাক-সবজি, দানা শস্য এবং প্রোটিনের উৎস রয়েছে। এগুলো শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে এবং সামগ্রিক সুস্থতা বাড়াতে কাজ করে। সতর্কভাবে খাবারের পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন ধরনের উপাদান যুক্ত করে রমজানে সুস্থ থাকা সহজ হবে। পুষ্টিকর খাবারকে অগ্রাধিকার দিলে তা আপনাকে শুধুমাত্র শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতেই সাহায্য করবে না, বরং এই পবিত্র মাসে মানসিক স্থিতিশীলতাও বাড়িয়ে তুলবে। এ ধরনের খাবার দীর্ঘ সময় আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে।
২. হাইড্রেট থাকা
হাইড্রেশন হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ ডিহাইড্রেশন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। রোজার সময় তৃষ্ণা এড়াতে নোনতা, মসলাদার এবং ভাজা খাবার খুবই কম খাবেন বা সম্ভব হলে এড়িয়ে যাবেন। এমন তরল বেছে নিন যাতে প্রচুর ক্যাফেইন নেই, কারণ এটি ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে। ইফতারে পানি ও খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙুন। নামাজ শেষে তবেই ভারী খাবার গ্রহণ করুন। এতে আপনার পেট খাবার পরিপাকের জন্য তৈরি হতে পর্যাপ্ত সময় পাবে।
৩. ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ
ডুবো তেলে ভাজা খাবার এবং চিনিযুক্ত খাবারে বেশি ক্যালোরি থাকে। এ ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রার ওঠানামা রোধ করতে পারে। এ ধরনের খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবার যোগ করার চেষ্টা করুন। ডুবো তেলে ভাজার পরিবর্তে স্টিম, অল্প পরিমাণে তেলে নাড়াচাড়া করা এবং বেক করা খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৪. পরিমিত খাওয়া
ইফতারে উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত খাবার এবং চিনিযুক্ত পানীয় অনেক বেশি খেয়ে ফেলবেন না। সেহরি বা ইফতারে বেশি খাওয়া উচিত নয়। পরিমিত খেলেই তা আপনাকে সুস্থ রাখবে। সাধারণত ২০ মিনিট ধরে খেলেই আমাদের পেট ভরে যায়। তাই মন দিয়ে খাওয়া এবং আপনার ক্ষুধা মিটলে তা বুঝতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মননশীল খাওয়ার এই অভ্যাসটি শরীরের ওপর সামগ্রিক চাপ কমায়।
৫. সেহরি খাওয়া
পুষ্টিকর সেহরি দিয়ে দিন শুরু করুন। জটিল শর্করা যেমন দানা শস্য, ওটমিল; প্রোটিন যেমন ডাল, মটরশুটি, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, মসুর ডাল, মুরগির মাংস, ডিম ইত্যাদি খেতে পারেন। লবণবিহীন বাদাম খেতে পারেন এক মুঠো। সারাদিন হাইড্রেটেড থাকার জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন। স্যুপ এবং জুসের মতো তরল সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন।