অগ্রসর রিপোর্ট : আমাদের হাতের নাগালেই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মসলাজাতীয় খাবার। যেগুলো খাবারের স্বাদ যেমন বাড়িয়ে দেয় তেমনি বাড়ায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ওষুধি গুণসম্পন্ন তেমন একটি মসলাজাতীয় খাবার হচ্ছে রসুন।
ভেষজ বা প্রাকৃতিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে রসুনকে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এটি একটি পেনিসিলিন জাতীয় মসলা। রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফসফরাস, অ্যালুমিনিয়াম, ক্যালসিয়াম, রিবোফ্লাভিন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ক্লোরিন, সেলেনিয়াম, জিংক ও ভিটামিন সি।
আর তাই রসুনকে বলা হয় প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। রসুন অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিফাংগাল, অ্যান্টিভাইরাল হিসেবে কাজ করে। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখে।
রসুনের যত উপকার:
* রক্তনালী পরিষ্কার রাখতে ও স্বাভাবিক রক্তচলাচলে রসুনের উপকারিতা অনেক। এতে রয়েছে ‘অ্যাজোইন’ নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। এ পদার্থ নির্বিঘ্নে রক্ত চলাচলে সহায়তা করে এবং রক্তজমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। এছাড়াও রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে। হৃদরোগজনিত সমস্যায় এটি একটি ভীষণ কার্যকর ওষুধ। ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রমাণিত এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
* রসুনে থাকা ‘অ্যালিসিন’ নামক পদার্থ শরীরের বিভিন্ন ক্ষত সারাতে উপকারী ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও শরীরের রোগজীবাণু ধ্বংস করে।
* শীতের সময়ে ঠান্ডা লাগা কিংবা গলা বসে যাওয়া, গলাব্যথা, গেঁটেবাত, হাঁপানি কিংবা ব্রংকাইটিস সমস্যায় কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাওয়ার বিধান রয়েছে।
* রসুনে থাকা সালফার আমাদের শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থিগুলোকে সচল রাখে ও প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসরণ করতে সাহায্য করে।
* রসুন খেলে যৌনতা বৃদ্ধি পায়। যৌন অক্ষমতা থেকে মুক্তি পেতে রসুনের জুড়িমেলা ভার।
* আয়ূর্বেদ শাস্ত্রমতে, মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে রসুন উপকারী। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার যেমন প্রোস্টেট, মূত্রথলি ও ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধেও রসুন দারুন কাজ করে।
* হজমের সমস্যা দূর, লিভারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়া ও এলার্জির সমস্যা সারিয়ে তুলতে রসুন কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
রোমান সৈন্যদের যুদ্ধে যাবার সময় সঙ্গে করে রসুন দেওয়া হতো। এর কারণ হচ্ছে রসুন দেহের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। কর্মক্ষমতা বাড়ায় ও বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
কীভাবে খাবেন?
দৈনন্দিন খাবার রান্নায় কমবেশি সবাই রসুন ব্যবহার করেন। এছাড়াও রসুনের তৈরি আচার স্বাদে অনন্য। বেশি উপকার পেতে হলে প্রতিদিন অন্তত ২ কোষ রসুন চিবিয়ে খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপের সঙ্গেও রসুন ব্যবহার করা যেতে পারে।
কখন খাবেন না?
কারো কারো ক্ষেত্রে রসুন খেলে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা যেতে পারে কিংবা এলার্জি বেড়ে যেতে পারে। এ ধরনের সমস্যা দেখা গেলে আপাতত কাঁচা রসুন খাওয়া বাদ দিতে পারেন। এছাড়াও যাদের কোথাও কেটে গেলে সহজে রক্তপড়া বন্ধ হয় না তারাও এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন। কেনন, রসুন শরীরে রক্তজমাট বাঁধার ক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।