রংপুর প্রতিনিধি- রংপুরে চার লেন সড়ক নির্মাণে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সম্প্রতি ওই সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়। গত মাসেই প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সড়কটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু এ স্বল্প সময়ের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশের কার্পেটিং উঠে গেছে। ফলে জনমনে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) বিশেষজ্ঞ দল গত বুধবার সড়কটি পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে তত্কালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন রংপুরে চার লেন সড়কের কাজটি উদ্বোধন করেন। কাজের দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার, ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হয় ১৪০ কোটি টাকা। কয়েক দফা কাজের সময়সীমাও বাড়ানো হয়। চলতি বছরের জুনে কাজটি শেষ হয়। ১৪ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের এক মাসের মধ্যে সড়কের সাড়ে ৪০০ মিটারের কার্পেটিং উঠে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে রেলগেট পর্যন্ত নির্মিত সড়কের অনেক স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর শহরের মধ্যে এবং বাইপাস দিয়ে মোট ১৬ কিলোমিটার রাস্তা চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পের কাজ ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়। ওই কাজ শেষ হওয়ার পর অনেক স্থানে কার্পেটিং উঠে যায়। আবারো তা সংস্কার করা হয়। পরে ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৬৫ ফুটের চার লেনবিশিষ্ট এ সড়কের উদ্বোধন করেন। কিন্তু এক মাসের মধ্যে আবারো কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে। সওজ কর্তৃপক্ষ পাথর কেটে সড়কের পাশে ফেলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সওজের পক্ষ থেকে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সড়ক মেরামতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেও চিঠি দেয়া হয়। গত বুধবার সওজের রোড রিসার্চ ল্যাবরেটরির নির্বাহী প্রকৌশলী সালমা আক্তার ও সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব এলাহী রংপুরে আসেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি পরিদর্শন ও নমুনা সংগ্রহ করেন। এ সময় রংপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. আব্দুল্লাহ্ আল মামুনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিএনকো নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণের কাজ শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩ সালে কাজটি শেষ না করে চলে যায়। জেলার সচেতন মহলের দাবি— সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি মানসম্পন্ন কাজ না করায় সড়কটি মেয়াদ পার হওয়ার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রংপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পরই ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বুধবার দুই সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল গবেষণার জন্য সড়কের বিভিন্ন অংশের নমুনা সংগ্রহ করছে। তিনি বলেন, সড়কটির ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড এক বছর। ফলে প্রতিষ্ঠানটি আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিধি মোতাবেক তা দেখভালের দায়িত্ব পালন করবে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে মেরামতের কাজ শুরু হবে।