স্টাফ রিপোর্টার: যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল ভয়াবহ তুষার ঝড়ের ধকল আস্তে আস্তে কাটিয়ে উঠছে। তবে ওয়াশিংটন এখনও তুষারপাতের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি । তুষারপাতে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। সরকারি বিভিন্ন অফিস ও স্কুল সোমবারও বন্ধ রয়েছে।
গত শুক্রবার থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত তুষার ঝড়ে কয়েক রাজ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দেশটির সাড়ে আট কোটি লোকের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। তুষারপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে বাসিন্দাদের বাড়ির মধ্যে থাকতে ও রাস্তায় বের না হতে আহবান জানানো হয়েছে।
নিউইয়র্কের কেন্দ্রীয় পার্কে ২৬ দশমিক ৮ ইঞ্চি এবং ওয়াশিংটনে ২২ ইঞ্চির বেশি পুরো বরফ জমেছে। তুষারপাতে ওয়াশিংটন অচল হয়ে পড়েছে।
পূর্ব উপকূলের বিভিন্ন নগরীতে রেকর্ড পরিমাণ তুষারপাত হয়েছে। ফিলাডেলফিয়া ও বাল্টিমোরেও ভয়াবহ তুষারপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে তুষার ঝড় থেমেছে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিউইয়র্কের অচলাবস্থা আস্তে আস্তে কাটতে শুরু করেছে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। নিউইয়র্ক নগরী, লং আইল্যান্ড ও নিউ জার্সির বিভিন্ন সড়ক পুনরায় খুলে দেয়া হয়েছে।
হাজার হাজার লোক পার্কে ঘুরে বেড়ায়। কেউ কেউ বরফের চাই নিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলে। কেউ বরফের ওপর স্কি খেলে। শিশুরা হাসিমুখে শীত উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়ে আসে।
ব্রডওয়ে থিয়েটার পুনরায় শো চালু করেছে। জাদুঘর খুলেছে। প্রধান প্রধান সড়ক থেকে বরফ পরিষ্কার করা হয়েছে এবং তাপমাত্রা বেড়ে শূন্য ডিগ্রী হয়েছে।
তবে তুষার ঝড় সংশ্লিষ্ট কারণে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে। কর্তৃপক্ষ এখনও সতর্কতা মেনে চলার আহবান জানাচ্ছেন।
মেয়র বিল দ্য ব্লাসিও এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া নগরবাসীকে রাস্তায় বের না হওয়ার এবং গাড়ি চালানোর সময় খুবই সতর্কতা মেনে চলার আহবান জানানো হয়েছে।’
ওয়াশিংটনও ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। বড় বড় রাস্তা থেকে তুষার সরানো গেলেও পার্শ্ব রাস্তাগুলো এখনও তুষারে ঢাকা পড়ে রয়েছে। সরকারি স্কুলগুলো এখনও বন্ধ রয়েছে এবং সোমবার সামান্য কিছু গণপরিবহণ চালু হয়েছে।
ট্রেন প্রতি ২০-২৫ মিনিট পরপর চলবে। নগরীতে ছয়টি পাতাল রেল লাইনের কেবল তিনটি খুলেছে। এছাড়া কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাস সার্ভিস সোমবার থেকে বেলা ১২ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে।
সোমবার ওয়াশিংটনে রিগ্যান ন্যাশনাল ও ডালেস ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে সীমিত আকারে ফ্লাইট চালু হবে।
ওয়াশিংটন মেয়র মারিয়েল বাওসার বলেন, রোববার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও লোকজনকে আরো কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা রাস্তায় গাড়ি না বের করার আহবান জানানো হয়েছে।
আরাকানসাস, ডেলাওয়ার, কেন্টাকি, মেরিল্যান্ড, নিউইয়র্ক, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, সাউথ ক্যারোলাইনা, ভার্জিনিয়া ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অনেকে তুষার সরানোর সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
নিউজার্সির গভর্নর ক্রিস ক্রিসটি বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকার আহবান জানিয়েছেন।
জরুরী বিষয়ক কর্মকর্তারা জানান, তুষার ঝড়ের সময় লাখ লাখ লোক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে কেবল নর্থ ক্যারোলাইনায় প্রায় দেড় লাখ লোক বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।