অগ্রসর রিপোর্ট : পূর্ব ঘটনার জেরে মধ্যরাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) কাজী নজরুল ইসলাম হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টায় এ সংঘর্ষ হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন প্রাধ্যক্ষ ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম শিক্ষার্থীদের হলে নিয়ে আসেন।
ড. মোকাদ্দেস বলেন, ‘ছাত্রদের সংঘর্ষের কথা শুনে আমি হলে আসি। এরপর প্রক্টরিয়াল টিমকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে নিয়ে আসি এবং হলের ফটক বন্ধ করে দেই। এখন (রাতে) শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছে। তবে আমার শিক্ষার্থীদের যারা মারধর করেছে তাদের বিচার চাই। তবে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিক ঘটনাস্থলে আসেননি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।’
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় নজরুল হলের এক ছাত্রলীগকর্মীকে মারধর করেন বঙ্গবন্ধু হলের এক ছাত্রলীগকর্মী। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান দুই হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
সংঘর্ষের বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হলের তিন-চারশ পোলাপাইন আমাদের হলে এসে হামলা চালায়। আমি হলের সবাইকে ভিতরে রাখার চেষ্টা করেছি। ওরা যেভাবে হামলা চালিয়েছে কয়েকজন মার্ডার হয়ে যেত। এই রকম নৃশংস হামলার বিচার চাই।’
এদিকে, বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম বলেন, ‘আমরা চা খেতে হলের সামনে দোকানে যাই। সেখানে নজরুল হলের রায়হানসহ কয়েকজন উপস্থিত হয়। এসময় রায়হান আমাদের হলের একজনকে মারধর শুরু করে। আমার উপরও অতর্কিত হামলা করে। আমি তবুও তাদের সভাপতিসহ সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের দিকে ইট মারতে থাকে। এতে অনেকে আহত হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘এসময় কারা কী করেছে আমি দেখেছি। আমি সবাইকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। এখন হলের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে অবস্থান করছে। যে ঘটনাটি ঘটেছে, এ ঘটনা পরবর্তীতে না ঘটার জন্য আমার সভাপতির সঙ্গে বসতে হবে এবং সবাইকে নিয়ে সমাধান করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এখন শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসে এটা সমাধান করবো।’
উল্লেখ্য, এর আগে শুক্রবার জুমার নামায পড়তে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী সেলিম রেজাকে পথ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল রায়হান। নামাজ শেষে রায়হানের এমন আচরণের বিষয়ে জানতে চান বঙ্গবন্ধু হলের সেলিম রেজা, রিফাতসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এসময় দুই হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।