অগ্রসর রিপোর্টঃ বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা চাইলে ভারতে যে কোন ধরনের বিনিয়োগ করতে পারবে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ উদ্যোগকে ভারত স্বাগত: জানাবে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এক মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রীকে এ কথা জানান।
সচিবালয়স্থ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান শেষে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন,ভারতের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদা বিবেচনায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের ভারতে স্বাগত জানানো হবে বলেও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার তাকে জানিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পাটসহ কিছু পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে। এ জটিলতা দূর করে রপ্তানি বৃদ্ধির বিষয়ে উভয়দেশ একমত হয়েছে।
ভারতের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের তুলনায় বেড়েছে উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন,গত নয় মাসে ভারতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩১ শতাংশ।
তিনি বলেন, চলমান বর্ডারহাট ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। বর্তমান ৪টি বর্ডারহাট চালু রয়েছে, ২টি হাটের নির্মাণ কাজ প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে এবং আরো ৭টি হাট স্থাপনের বিষয় বিবেচনাধী রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও তা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, কারন ভারত থেকে বাংলাদেশ কাঁচামাল আমদানি করে পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি আয় করছে। এসব দেশের সাথে বাংলাদেশে’র বাণিজ্যও পজেটিভ।
এক্ষেত্রে তিনি বলেন, ভারত থেকে শিল্পের কাাঁচামাল আমদানি করতে যাতে অতিরিক্ত কোন ধরনের শুল্ক আরোপ করা না হয়, সে বিষয়ে উভয়দেশ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। ভারতের সাথে বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে উভয় দেশ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধে ভারত সবধরনের সহযোগিতা দেবে। এ বিষয়ে উভয়দেশই পরস্পরকে সহযোগিতা করতে একমত পোষণ করেছে।
তিনি এ সময় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত পাশে ছিল বলেই এতো-অল্প সময়ের মধ্যে ‘আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি’। ভারত বাংলাদেশের অতন্ত বিশ^স্থ বন্ধু। ভারতের আন্তরিকতার কারনে দীর্ঘদিন পর হলেও ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে তিনি জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, দক্ষিণ-এশীয় অঞ্চলে বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ,ভূটান,ভারত ও নেপালের সমন্বয়ে ‘বিবিআইএন’ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারত সহযোতিা করছে।
বাংলাদেশ শুণ্যহাতে যাত্রা শুরু করে আজ বিশে^র মধ্যে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এদিকে ভারতের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন,‘ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তার দেশের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানি আগের তুলনায় বেড়েছে। ভারতে বাংলাদেশে যে কোন ধরনের বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে।’
তিনি বলেন, বর্ডারহাট ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যেমে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ডারহাটের সংখ্যা বাড়ানো হলে উভয় দেশের মানুষ আরো উপকৃত হবে।
ভারত সন্ত্রাস বিরোধী কাজে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এ কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, এ ব্যাপারে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে।
এ ছাড়াও ব্যবসা ও বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে বলেও হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত সচিব(এফটিএ) মনোজ কুমার রায় এবং যুগ্মসচিব(এফটিএ) মুনির চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।