দৈনিক অগ্রসর রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমার প্রত্যাশা, এই মহান নারীর জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে তারা ধারণা পাবে।’
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা তাঁর বানীতে বলেন, বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত সহচর। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।
তিনি বলেন, এ মহিয়সী নারী ছিলেন সহজসরল নিরহঙ্কারী। স্বামী একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মত তিনি স্বামী-সংসার, আত্মীয়স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পরে দেশের পুনর্গঠনে তাঁর অসাধারণ ভূমিকার কারণে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহিয়সী এ নারী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সাফল্যেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কারণে স্বামীর কারাবরণকালীন উত্তাল দিনগুলোতে হিমালয়ের মত অবিচল থেকে একদিকে তিনি স্বামীর কারামুক্তিসহ তাঁর অবর্তমানে প্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে সংসার, সন্তানদের লালনপালন, শিক্ষাদান, বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস যুগিয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামকে সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশ ও জাতির জন্য তাঁর অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে জাতি তাঁকে যথার্থই ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বামী, পুত্র, পুত্রবধূ ও নিকট আত্মীয়স্বজনসহ ঘাতকদের হাতে তিনিও নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেন যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
মহিয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ১৯৩০ সালের ৮ই আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পৈতৃক নিবাসে জন্ম গ্রহণ করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।