তানুমা তাকাশির বয়স প্রায় ৩৫। জাপানিজ এই তরুণ সংসদ সদ্যস্যের টোকিও অফিসে জাপান-বাংলাদেশ সর্ম্পক নিয়ে এই প্রতিবেদককে একটি সাক্ষাত্কার দেন। সাক্ষাত্কারে তানুমা তাকাশি বলেন, ‘জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো জোরদার করা দরকার। অতীতে এই সম্পর্ক যেমন ঐতিহাসিক ছিল, বর্তমানে তা পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। কারণ ঢাকার গুলশান ঘটনার পর জাপানি জনগণ এখনো সেটা মেনে নিতে পারেনি।’ তাকাশি আরো বলেন, ‘সেদিনের ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ প্রশংসনীয়, তবে এখনো জাপানিদের যে ভয়-ভীতি রয়েছে তা দূর করতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। এখনই উদ্যোগ নিতে হবে যেন সম্পর্কের অবনতি আর না হয়। জাপান বাংলাদেশের খুবই পরীক্ষিত বন্ধু। বঙ্গবন্ধুকে জাপানি জনগণ পূর্বে যেভাবে জানতো ও বিশ্বাস করতো এখনো তেমনই করে। অন্যদিকে, জাপানের পতাকা সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা যেমন মিল তেমনি দু-দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। এই কথাগুলো বর্তমান জাপানি জনগণকে আমি বুঝিয়ে যাচ্ছি। আমার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে জাপানি জনগণের কাছে এই কথাগুলো বলছি, তবে বাংলাদেশ সরকার এবং তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে এই কাজটি আরো এগিয়ে নিতে হবে। আর তখনই জাপানি ব্যবসায়ী ও জাইকার বিভিন্ন প্রজেক্টের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত হবেন এবং তাদের পূর্বের কাজে যোগ দেবেন বলে আমার বিশ্বাস।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাপান সরকার বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত। তাই বলে বাংলাদেশ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ নয়। কারণ সরকার তো এটা করেনি। সারা পৃথিবীতেই জঙ্গিরা এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আক্রমণের শিকার হয়েছে। আর এতে আমরাসহ অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, বাংলাদেশ খুবই দ্রুত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মূল করে যাচ্ছে এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।’ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে চীনের বিশাল ইনভেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা চীন-বাংলাদেশের বিষয়। এখানে দু-দেশের স্বার্থই জড়িত। তবে জাপানের অবস্থানও খুব পরিষ্কার। আমরা সবার সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্ক জোরদার করতে চাই। এখানে একটি কথা না বললেই নয়, বাংলাদেশ-জাপানের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা সর্মথন দিয়ে ছিলাম, এখনো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যুদ্ধে সর্মথন এবং সহযোগিতা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তা আরো শক্তিশালীভাবে এগিয়ে যাক সেটা আমি চাই।’