বাঘের ভয়াল শক্তিশালী রূপে কিছুই যায় আসে না মুরংদের৷ তাদের কাছে বাঘ মেরে খাওয়াই হল জমজমাট ব্যাপার৷ তাই এদের দেখলে বাঘ মশাই অনেক ভয় পান তা বালার অপেক্ষা রাখে না।
মুরং জাতি বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার অন্যতম আদিম বিলুপ্তপ্রায় জনগোষ্ঠী৷ ‘ম্রো’ নামেও তারা পরিচিত৷ পার্বত্য চট্টগ্রামের চোমিয়াপাড়া গ্রামে এদের দেখা যায়৷ এছাডা লামা, আলিকদম, থানছি ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকাতেও তারা থাকেন। পাহাড়ের উপর বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে তৈরি বাড়িতে থাকে তারা৷ যেগুলি ‘মাচাং’ নামে খ্যাত৷ প্রতিদিন সকালে ঘন জঙ্গলে গিয়ে বাঘ, হরিণ, শূকর, ছাগল শিকার করে মুরং বা ম্রো-রা৷
বাংলাদেশ ও মায়ানমার প্রতিবেশী রাষ্ট্র৷ একদিকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অন্যদিকে মায়ানমারের রাখাইন (আরাকান) প্রদেশ৷ মুরং বা ম্রোদের আদি নিবাস মায়ানমারের সেই আরাকান রাজ্য। অধিকাংশই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
অত্যন্ত ক্ষিপ্র গতি ও দুর্দান্ত সাহসে ভর করেই বাঘ শিকারে যান মুরংরা৷ মানুষ খেকো বাঘ এদের দেখে ভয় করে৷
পুরুষতান্ত্রিক নিয়মে পরিচালিত হয় ম্রো সমাজ। তবে মহিলারাও কম পরিশ্রম করেন না৷ প্রতিদিন সকালে তারা পায়ে হেঁটে যান দূর দূরান্তে পানীয় জল সংগ্রহে। ঘরের সমস্ত কাজ করার দায়িত্ব থাকে তাদের উপর৷
কঠিন তাদের জীবনযাত্রা। কিন্তু আনন্দে আহ্লাদে জীবন কাটানো তাদের রীতি৷ মুরং বা ম্রোদের বিখ্যাত অনুষ্ঠান কুমলাং ৷ অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের আশায় তারা এই উৎসব পালন করেন৷
মুরং জাতি তাদের খাদ্যাভ্যাস ও রীতির কারণে নৃতাত্ত্বিকদের কাছে বিশেষ পরিচিত।