সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বোরো ফসল হারা ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারি সহায়তার ত্রাণের ভিজিএফের চাল আত্মসাতে’র অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। সরকারি ভাবে পরিবহন খরচ বহন করা হলেও মঙ্গলবার গণহয়রাণীর শিকার হয়ে চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তের বলি হতে গিয়ে প্রায় সাড়ে ১৪’শ কার্ডধারীকে ৫’শ টাকা যাতায়াত খরচ ব্যক্তিগত ভাবে বহন করে উপজেলা সদর থেকে চাল সংগ্রহ করতে হয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, চাল বিতণের পর বন্তা বিক্রির টাকাও রয়েছে গেছে ওই চেয়ারম্যানের পকেটে।
জানা গেছে, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম আহমেদ চৌধুরী রানার বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল ওজনে কম দিয়ে আত্মসাৎ’র অভিযোগ এনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ওই ইউপি চেয়ারম্যান দোয়ারাবাজার উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক। জনস্বার্থে এ অভিযোগটি দায়ের করেছেন করেছেন, আনোয়ার হোসেন নামের ওই ইউনিয়নের এক বাসিন্দা।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও ওপারের ঢলে বোরো ফসল হারানো ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ত্রাণ সহায়তা হিসাবে ভিজিএফের কার্ডের মাধ্যমে উপকারভোগী পরিবার প্রতি ৩৮ কেজি চাল বিপরীতে উপজেলার বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যেক কার্ডধারীকে চাল বিতরণকালে কৌশলে ৩ থেকে ৬ কেজি করে চাল কম দিয়েছেন। ওই ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামের শাহ আলম ৩২ কেজি, কুশিউড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম ৩৩ কেজি ও মির্ধারপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম ৩১ কেজি করে চাল পেয়েছেন। একই কৌশলে গড়ে প্রত্যেক কার্ডধারীকে অভাবের সুযোগ নিয়ে ওজনে গড়ে ৪.৭৫ কেজি চাল কম দিয়ে ১৫’শ কার্ডের বিপরীতে ৭ হাজার ১২৫ কেজি চাল কম দিয়ে চেয়ারমান ওই চাল কালো বাজারে বিক্রয় করে দিয়েছেন।
এদিকে ওই চাল সংগ্রহ করতে গিয়ে অভাবতাড়িত লোকজন গণহয়রাণীর শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সরকারি পরিবহন খরচ পকেটস্থ করতে গিয়ে চেয়ারম্যান রানা সিদ্ধান্তে প্রত্যেক কার্ডধারীকে রিক্সা, মোটর সাইকেল ভাড়া হিসাবে আসা যাওয়ায় কমপক্ষে ৫’শ টাকা করে দিয়ে উপজেলা সদর থেকে চাল সংগ্রহ করতে হয়েছে। অথত, চাল পরিবহনের জন্য সরকারি ভাবে ৯ হাজার টাকাও উঠিয়ে নিয়েছেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান।
বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম (মাষ্টার) আহমেদ চৌধুরী রানার বক্তব্য জানতে বুধবার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘খাদ্য গুদামের ওসিএলসি, ট্যাগ অফিসারকে সামনে রেখে চাল বিতরণ করা হয়েছে, গুদাম থেকে চাল বের করতে গিয়ে পরিবহনে ৯ হাজার টাকা ব্যায় করা হয়েছে, ৪০ থেকে ৪৫ জন কার্ডধারী চাল নিতে না আসায় ওই চাল গুদামেই জমা রাখা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, রাস্তাঘাট ভালো না থাকায় উপজেলা সদরেই চাল বিতরণ করতে হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম ভিজিএফের চাল ওজনে কম দিয়ে চাল আত্মসাৎ প্রসঙ্গে বুধবার বাংলাদেশ বাণীকে বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে, অভিযোগ প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হলে যথাযত প্রক্রিয়ায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।