অগ্রসর রিপোর্ট:
অতি সম্প্রতি ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ডিক্রি জারি করে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরোঝিয়ার নেতাদের উপস্থিতিতে সংযুক্তি সনদে স্বাক্ষর করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আনন্দঘন ওই অনুষ্ঠানে পুতিন বলেন, ওই চার অঞ্চলের জনগণ গণভোটে যে সুস্পষ্ট রায় দিয়েছে কিয়েভের উচিত জনগণের সেই রায়ের প্রতি সম্মান দেখানো। জনতার ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখানোই শান্তির একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন পুতিন।
সংযুক্তি সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ:
পুতিন আরও বলেন: আমরা কিয়েভের প্রতি আহ্বান জানাই দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ করে আলোচনার টেবিলে আসতে। রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে ওই চার অঞ্চলের যুক্ত হবার ঘটনায় বলেছেন, ভ্লাদিমির পুতিন যতদিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকবেন ততদিন মস্কোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করবে না কিয়েভ।
ইউক্রেনের চার অঞ্চলের রাশিয়ার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হবার বিষয়টি আট মাস ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের একটি সংবেদনশীল ঘটনা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়া ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের অন্যতম লক্ষ্যই ছিল স্বাধীনতা ঘোষণাকারী লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে সাহায্য করা। রাশিয়া ওই দুই অঞ্চলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সে কারণেই তারা তাদের সাহায্যে এগিয়ে যায়। যদিও পরবর্তী পর্যায়ে ইউক্রেনের মাটিতে রুশ সেনারা প্রবেশ করার পর যুদ্ধের গতিপথ এবং মস্কোর লক্ষ্য ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।
যুদ্ধের কৌশল হিসেবে রাশিয়া ইউক্রেনের ওই চার প্রদেশ দখল করে নিয়ে সেখানে গণভোটের আয়োজন করে। গণভোটের বিষয় ছিল ওই চার অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া না হওয়ার বিষয়ে। গণভোটে ওই চার অঞ্চলের রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবার পক্ষে রায় দেয়। পুতিন আগেই খেরসন এবং জাপরোজিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়ে রেখেছিল। যাতে গণভোটের পর ওই অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবার প্রক্রিয়ায় আইনি বাধা না থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো ইউক্রেনে রাশিয়ার লক্ষ্য অর্জনে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট বাধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। পশ্চিমারা এ পর্যন্ত ২৫ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র দিয়েছে ইউক্রেনকে। আমেরিকা এবং ন্যাটো ভেবেছিল ওইসব অস্ত্রশস্ত্রের সাহায্যে ইউক্রেনের সেনারা যুদ্ধ পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারবে। কিন্তু মোটেও তা হয়নি। মস্কো তাদের লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমাদের ওপর নির্ভর করে ইউক্রেনীয়দেরকে আসলেই চড়া মূল্য দিতে হলো। #
সূত্র: পার্স টুডে।