অগ্রসর রিপোর্ট : ‘সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা , নারীদের অংশগ্রহণে ম্যারাথন, সংবর্ধনানুষ্ঠান ও আলোচনা সভা।
দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বেগম বদরুন্নেসা আহমেদ ট্রাস্ট নারী সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।
বেগম বদরুন্নেসা আহমেদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বেগম বদরুন্নেসা আহমেদ, ট্রাস্টের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজা খানম, বাংলা রেকর্ডসের চেয়ারম্যান ও সাবেক আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, অধ্যাপক খন্দকার নজরুল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রথম নারী সংসদ উপনেতা ও নারী বন ও পরিবেশ মন্ত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি, প্রথম নারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি, প্রথম নারী স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী , প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং প্রথম নারী মেজর জেনারেল সুসানে গীতিকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
শিরীন শারমিন চৌধুরী এসময় তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নারী জাগরণের পথিকৃত যারা, তাদের পদাংক অনুসরণ করেই শত বাঁধা অতিক্রম করে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সাহসীকতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারীরা। বেগম রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নারী জাগরণে এবং আলোকিত নারী তৈরিতে কাজ করে গেছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৯ উপলক্ষে জাতীয় নারী জোটের উদ্যোগে আজ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় নারী জোটের আহ্বায়ক আফরোজা হক রীনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, নারী বিষয়ক সম্পাদক উম্মে হাসান ঝলমল, নারী নেত্রী সৈয়দা শামীমা সুলতানা হ্যাপী, প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্যে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। এখনো বহুপথ বাকি রয়েছে। তারা বলেন, দৃষ্টিভঙ্গি বদলের যে সংগ্রাম সেই সংগ্রাম করাই খুব জরুরি।
র্যালি, আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আর্ন্তজাতিক নারী দিবস পালন করেছে।
এ উপলক্ষে আজ সকালে রমনা পার্কের অস্তাচল গেট থেকে শুরু করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন পর্যন্ত এক র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালি শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন’র সেমিনার রুমে (রমনা, ঢাকা) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ও নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক এবং নিউজ টুয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। একই অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ‘নারীর কথা-১৪’ নামক একটি প্রকাশনা ও আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত পোস্টারের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব এবং ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করে। জাতীয় প্রেসক্লাব বিকেলে ক্লাবের নারী সদস্যদের নিয়ে মতবিনিময় ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। ডিআরইউ’র কর্মসূচির মধ্যে ছিল শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভা।
১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । জাতিসংঘ দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় । এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই এই দিনটি নারী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।