বিশেষ প্রতিনিধি- বিভিন্ন সময় লাইসেন্সবিহীন, চোরাই বা অবৈধ মোটরযান জব্দ করে পুলিশ। এগুলো বছরের পর বছর ডাম্পিং স্টেশনে পড়ে থাকে। এবার এসব মোটরযান ব্যবহারে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ উদ্যোগের কথা জানানো হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের জব্দকৃত মোটরযান ব্যবহার বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, দেশের প্রতিটি থানায় পুলিশের যানবাহনের অভাব রয়েছে। অথচ জব্দকৃত অনেক মোটরযান বছরের পর বছর ডাম্পিং স্টেশনে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় আইন না থাকায় পুলিশ এগুলো ব্যবহার করতে পারছে না। এগুলো ব্যবহারের সুযোগ মিললে পুলিশের পক্ষে অপরাধ দমন অনেকটা সহজ হবে বলে মনে করেন কমিটির সদস্যরা।
এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশের এ দাবি পূরণে নেয়া উদ্যোগের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, জব্দকৃত মোটরযান নষ্ট না করে রাষ্ট্রীয় কাজে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা ঠিক করতে আইন মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জব্দকৃত যানবাহন ব্যবহার করার বিষয়ে আইনি ব্য?াখা চেয়ে এ চিঠি দেয়া হবে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিতে চাই। সেটা এক বছর বা ২ বছর যা-ই হোক। কোনো যানবাহন জব্দ করার পর নির্ধারিত সময় পার হলে তার মালিকানা হবে রাষ্ট্র। এসব যানবাহন নষ্ট না করে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করা হবে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, ওমর ফারুক চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফখরুল ইমাম ও কামরুন নাহার চৌধুরী অংশ নেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
যানজট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে সাব-কমিটি: রাজধানীর যানজট নিরসনে করণীয় নির্ধারণ করতে সাব-কমিটি গঠন করে দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে আহ্বায়ক করে গঠিত তিন সদস্যের এ কমিটির অন্যরা হলেন— জাতীয় পার্িটর সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম ও বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ। কমিটিকে আগামী বৈঠকে যানজট নিরসনে করণীয় ঠিক করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সী আরো জানান, ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। এর অর্ধেকের বেশি সময় রাজধানীর যানজট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজধানীর যানজট এলার্মিং ইস্যু। বিদেশীরা আসতে পারেন না, ব্যবসায়ীরা চলতে পারেন না। যে করেই হোক এর একটি সমাধান করা দরকার। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে যানজট নিরসনে কাজ হচ্ছে। তার পরও কোনো সুফল আসছে না। তাই এবার সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এমআরপি নিয়ে সংশয়: মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ইস্যু নিয়ে কমিটিতে আলোচনা হয়। বৈঠকে বলা হয়, আগামী ২৪ নভেম্বরের পর প্রবাসী বাঙালিরা আর হাতে লেখা পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু যে গতিতে এমআরপি তৈরি করা হচ্ছে, তাতে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে সব পাসপোর্ট এমআরপি করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয় কমিটির পক্ষ থেকে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কমিটিকে আশ্বস্ত করেছেন, ২৪ নভেম্বরের মধ্যেই সব পাসপোর্ট এমআরপি করা সম্ভব। যেভাবে কাজ চলছে, তাতে উদ্বেগের কিছু নেই।
উল্লেখ্য, ৩৫ লাখ এমআরপি পাসপোর্ট ইস্যুর লক্ষ্য রয়েছে মন্ত্রণালয়ের। এর মধ্যে ইস্যু করা হয়েছে ১৯ লাখ ৪ হাজার ৩১৬টি। প্রক্রিয়াধীন ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮৪টি।