ষ্টাফ রিপোর্টার- আজ যিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন, কাল তাকে প্রতিবন্ধিতা বরণ করতে হতে পারে। প্রতিবন্ধিতা সমাজের কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সবাইকে সমন্বিতভাবে প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন ‘অটিজম ইন পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ’ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে গতকাল এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা কয়েকজন প্রতিবন্ধী গতকালের সেমিনারে তাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা সমস্যা ও দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। প্রতিবন্ধীরা এ সময় সুচিকিৎসা ও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির নিশ্চয়তা দাবি করেন। এ সেমিনার আয়োজন করে ‘ডিজঅ্যাবলড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন (ডিআরআরএ)’। ডিআরআরএর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য নাইমুর রহমান দুর্জয়, কাজী রোজি ও মীর মোসতাক আহমেদ রবি। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন সিবিএমের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. শাহনেওয়াজ কুরেশি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব তরিকুল ইসলাম।
আয়োজক ডিআরআরএর পক্ষে আমিনুর রহমান ও ফরিদা ইয়াসমিন সেমিনারে দুটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার সাহায্যে প্রতিবন্ধিতার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন। আয়োজকরা জানান, বিশ্বের ১৫ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধিতার শিকার। বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইডের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের ১৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে মাত্র ৫২ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে সাধারণ চিকিৎসাসেবা পেয়ে থাকে। এছাড়া মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য দেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রতি এক লাখ নাগরিকের জন্য মানসিক চিকিৎসক রয়েছেন দশমিক ৪৯ জন।
গতকালের সেমিনারে বক্তারা বলেন, সারা দেশে প্রতিবন্ধীরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে নেই কোনো সঠিক নির্দেশনা। এমনকি কোথায় গেলে চিকিৎসা পাওয়া যাবে, সে বিষয়েও কেউ জানে না। বক্তারা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য দেশের একমাত্র বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান পঙ্গু হাসপাতালে প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা আরো বলেন, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করলে জন্মগত প্রতিবন্ধিতা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।