অনলাইন ডেস্ক- ফরিদপুর শহর দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে অবস্থিত। প্রসিদ্ধ কামেল শাহ শেখ ফরিদউদ্দীনের নামে এ জেলার নাম ফরিদপুর হয়। পূর্বে ফতেহ আলীর নামে এলাকাটি ফতেহবাদ নামে পরিচিত ছিল। ১৮৫০ সালে লর্ড ডালহৌসী ঢাকা জেলাকে ভেঙ্গে ফরিদপুর জেলা সৃষ্টি করেন। কিছু কালপর ১৮৬৯ সালে ফরিদপুর শহরকে পৌরসভায় রুপান্তর করা হয়। ২২.৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। ফরিদপুর পৌরসভা ১৯৮৩ সালে “গ’’ থেকে “খ’’ শ্রেণীতে এবং ১৯৮৬ সালে “খ’’ থেকে “ক’’ শ্রেণীতে উন্নতী হয়। ১৪ টি মৌজায় ৩৬ মহল্লা নিয়ে ৯টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট্য ফরিদপুর পৌরসভা জনগণের সেবা করে চলেছে। ২০০৯ সনে পৌরসভার জনসংখ্যা ছিল ১,৩৫,৮৩৭ জন। বর্তমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩.৯১%। ধারনা করা হয় আগামী ২০৩০ সালে জনসংখ্যা হবে ৩,২১,৯২২ জন। আয়তন ২০৭২.৭২ বর্গ কিলোমিটার, ফরিদপুর জেলা ৮৯.২৯০পূর্ব হতে ৯০.১১০পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২৩.১৭০উত্তর হতে২৩.৪০০উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত, উত্তরে রাজবাড়ি ও মানিকগঞ্জ জেলা, দক্ষিণেগোপালগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে মাগুরা ও নড়াইল জেলা এবং পূর্বে মাদারিপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলা অবস্থিত।
ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠা ১৭৮৬ সালে। মতান্তরে এ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮১৫ সালে। ফরিদপুরের নামকরণ করা হয়েছে এখানকার প্রখ্যাত সুফি সাধক শাহ শেখ ফরিদুদ্দিনের নামানুসারে। এ জেলার পূর্বনাম ছিল ‘‘ফতেহাবাদ’’। ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠা সন ১৭৮৬ হলেও তখন এটির নাম ছিল জালালপুর এবং প্রধান কার্যালয় ছিল ঢাকা। ১৮০৭ খ্রিঃ ঢাকা জালালপুর হতে বিভক্ত হয়ে এটি ফরিদপুর জেলা নামে অভিহিত হয় এবং হেড কোয়ার্টার স্থাপন করা হয় ফরিদপুর শহরে। গোয়ালন্দ, ফরিদপুর সদর, মাদারিপুর ও গোপালগঞ্জ এই চারটি মহকুমা সমন্বয়ে ফরিদপুর জেলা পূর্ণাঙ্গতা পায়। বর্তমানে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ফরিদপুর, রাজবাড়ি, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর ও শরিয়তপুর এই পাঁচটি জেলায় রূপান্তরিত হয়েছে।
এই এলাকার প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে রয়েছে গারোদা মসজিদ (১০১৩ হিজরি), পাথরাইল মসজিদ ও দিঘী (১৪৯৩-১৫১৯ খ্রিস্টাব্দ), সাতৈর মসজিদ (১৫১৯ খ্রিস্টাব্দ)। এলাকার অন্য উল্লেখযোগ্য স্থাপনা হলো ফতেহাবাদ টাঁকশাল (১৫১৯-৩২ খ্রিস্টাব্দ), মথুরাপুরের দেয়াল, জেলা জজ কোর্ট ভবন (১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ), এবং ভাঙ্গা মুন্সেফ কোর্ট ভবন (১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দ), বসুদেব মন্দির ও জগবন্ধু আঙিনা।
তৎকালিন ফরিদপুর এর মাদারিপুর থেকে হাজি শরীয়তুল্লাহ ফরায়েজী আন্দোলন শুরু করেন। শরীয়তুল্লাহের পুত্র দুদু মিয়ার নেতৃত্বে এখানে নীল কর বিরোধী আন্দোলন হয়। জেলার প্রধান নীল কুঠিটি ছিলো আলফাডাঙা উপজেলার মীরগঞ্জে, যার ম্যানেজার ছিলেন এসি ডানলপ। এ জেলার ৫২টি নীল কুঠি এর অন্তর্ভূক্ত ছিল। গড়াই, মধুমতি ও বরশিয়া নদীর তীরে নীল চাষ হতো।
জেলা শহর বর্তমানে কুমার নদীর তীরে অবস্থিত। ফরিদপুর পৌরসভা সৃষ্টি হয় ১৮৬৯ সালে। ৯টি ওয়ার্ড ৩৫টি মহল্লা নিয়ে জেলা শহর গঠিত। এর আয়াতন ২০.২৩ বর্গ কিলোমিটার। ফরিদপুর জেলায় মোট পৌরসভা ৪টি, ওয়ার্ড ৩৬টি, মহল্লা ৯২টি, ইউনিয়ন ৭৯টি, গ্রাম ১৮৫৯টি। মোট উপজেলা ৯টি।