স্টাফ রিপোর্টার: মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু এবং নদী শাসনের উদ্বোধনের ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে নদীর দুই পাড়ের জেলা মুন্সীগঞ্জ ও শরিয়তপুরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
বহু আকাক্ষ্মিত এই সেতুর মূল কাজের আনুষ্ঠানিক শুরু উপলক্ষে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে দলে দলে মানুষ ঢোল-শহরতসহ নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে করতে এসে জড়ো হয়। কিশোর-তরুণ, আবাল, বৃদ্ধ, বণিতা-সর্বস্তরের মানুষে দুপুরের আগেই মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের উত্তর মেদেনী মন্ডলের খানবাড়ির মাঠের জনসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মীর শ্লোগানে শ্লোগানে চারদিক মুখরিত হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এখানে হাজারো হর্ষৎফুল্ল জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।
রং, বেরংয়ের ব্যানার ফেষ্টুন হাতে নিয়ে লোকজন বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে, পায়ে হেঁটে এমনকি বিস্তির্ণ চরাঞ্চল থেকে নৌকায় চড়ে জনসভাস্থলে আসে। সকল পথের গন্তব্য যেন ছিল জনসভামুখী।
রাস্তায়, নানা রংয়ের তোরণ, বাড়ি-ঘরের ছাদে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার, পোষ্টার এমনকি নদীবক্ষে নৌকায় ভাসমান অবস্থাতেও বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বড়ো বড়ো প্রতিকৃতি নিয়ে সামিল হয় জনতা।
এরআগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরিয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের নাওডোবা এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী শাসন এবং পরবর্তিতে নদীগর্ভে মূল সেতুর ৭নং পিলারের পাইলিংয়ের কাজের উদ্বোধন করেন। সেখানে ও উৎসূক জনতার প্রচন্ড ভিড় পরিলক্ষিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ৩০ মিনিটের বক্তৃতায় বলেন, দিনটি সমগ্র দেশবাসীর জন্য বিশেষকরে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের জন্য একটি আনন্দের দিন।
তিনি বলেন, এই পদ্মা সেতু আমার দেশের জনগণের জন্য এবারের বিজয় দিবসের উপহার। তিনি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সেতু নির্মাণের ডেটলাইন সম্পন্ন হবার আগেই এটি যান চলাচল ও ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।
কংক্রিট এবং ষ্টিল ফ্রেমের সাহায্যে তৈরী এই সেতু হবে দোতলা । যার দ্বিতীয় তলায় যানবাহন চলাচল করবে আর নিচতলায় থাকবে রেল পথ।
সেতু বিভাগ জানায়, এই সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণের ১৯টি জেলার সঙ্গে সরাসরি রাজধানী ঢাকার সড়ক ও রেলপথ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে মাওয়া ও জাাঁজিরা পয়েন্টে সেতুটির এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ প্রায় ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি কাজ আগামী বছর নাগাদ সম্পন্ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর শরিয়তপুরের জাজিরা এবং মাওয়ায় এ্যাপ্রোচ সড়ক এবং সার্ভিস স্টেশন-২ এর উদ্বোধন করেন। সরকার দেশের সর্ববৃহৎ মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুটি সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এই পদ্মা সেতুর মূল কাজের মধ্যে রয়েছে- মূল সেতু নির্মাণ, নদী শাসন, দুটি লিংক রোড এবং অবকাঠামো নির্মাণ (সার্ভিস এরিয়া)। সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিউল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতুর মূল নির্মাণ কাজের মধ্যে রয়েছে পাইলিং এবং নদী শাসন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।