স্টাফ রিপোর্টার: তুরস্কের অদূরে ইজিয়ান সাগরে শনিবার এক নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত ৩৭ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। কোস্টগার্ডের সদস্যরা তীরে ভেসে আসা নারী ও শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
অভিবাসন প্রত্যাশীরা ওই নৌকাটিতে চড়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়া চেষ্টা করছিল।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
মর্মভেদী এই দৃশ্যগুলো সিরীয় শিশু আইলান কুর্দির কথা মনে করিয়ে দেয়।
সেপ্টেম্বর মাসে তুরস্কের একটি সৈকতে আইলানের মৃতদেহের ছবিটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
ঘটনাস্থল থেকে এএফপি’র এক আলোকচিত্রী বলেন, উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় কানাক্কালে প্রদেশের আয়ভাচিক শহরের কাছের একটি সৈকতে ছড়িয়ে থাকা মৃতদেহগুলোর মধ্যে একটি ছোট শিশুর মৃতদেহ দেখতে পাওয়া গেছে।
এএফপি’র ছবিতে দেখা গেছে মৃত শিশুটির পরনে ছিল গাঢ় রঙের প্যান্ট ও নীল রঙের জামা। তার মুখটি ছোট একটি হ্যাট দিয়ে ঢাকা ছিল।
তার পাশে অপর এক লোককে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
অপর একটি ছবিতে একজন তুর্কি সৈন্যকে একটি বডিব্যাগে আর একটি শিশুর মৃতদেহ ভরে রাখতে দেখা গেছে।
এএফপি’র ওই আলোকচিত্রী বলেছেন, পানিতে আরো একটি শিশুর মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
সিরিয়া, আফগানিস্তান ও মায়ানমার থেকে এই অভিবাসন প্রত্যাশীরা এই নৌকায় চড়ে নিকটস্থ গ্রিক দ্বীপ লেসবসের উদ্দেশে যাত্রা করে। নৌকাটি তুরস্কের উপকূলে ডুবে যায়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় অজ্ঞাত সংখ্যক আরো বেশকিছু শিশু মারা গেছে।
এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল বলেছেন, সিরিয়া ও ইরাকে শান্তি ফিরে এলে জার্মানীতে আশ্রয় নেয়া অধিকাংশ শরণার্থীই দেশে ফিরে যাবেন বলে তিনি আশা করেন।
মেকের্লের শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর ভূমিকার বিরুদ্ধে প্রচন্ড চাপ ছিল।
তিনি যুগোস্লাভিয়ার সাবেক শরণার্থীদের উদাহরণ দিয়ে বলেন, শান্তি ফিরে এলে ১৯৯০ এর দশকে জার্মানীতে আশ্রয় নেয়া ওই শরণার্থীদের ৭০ শতাংশই দেশে ফিরে গেছে।
শনিবার সুইডিশ পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে স্টকহোমে একদল মুখোশপড়া লোক জড়ো হয়। তারা যুবক শরণার্থীদের ওপর হামলার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ করে। এরা নব্য নাৎসী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শহরের মধ্যাঞ্চলে পুলিশ মোতায়েন জোরদার করা হয়েছে। সেখানে দাঙ্গা পুলিশ ও হেলিকপ্টার ইউনিটও মোতায়েন করা হয়।
নগরীতে চরমপন্থীরা ‘শরণার্থীদের ওপর হামলা চালানোর’ পরিকল্পনা করছে জানতে পেরেই এই নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
গ্রীসের সামোস দ্বীপের অদূরে এক নৌকা ডুবির ঘটনায় ১০ শিশুসহ ২৫ শরণার্থী মারা যাওয়ার মাত্র দুই দিন পর তুরস্ক উপকূলের অদূরে সর্বশেষ নৌকা ডুবিতে এই প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটল।
তুরস্কের এক কর্মকর্তা বলেন, তুরস্কের কোস্টগার্ডের সদস্যরা সর্বশেষ নৌকা ডুবির এই মর্মান্তিক ঘটনায় শিশুসহ ৩৭টি মৃতদেহ উদ্ধা করেছে।
এর আগে তুরস্কের কোস্টগার্ড এক বিবৃতিতে ৭৫ শরণার্থীকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছিল।
এএফপি’র ওই আলোকচিত্রী অন্তত ১৯টি মৃতদেহ দেখেছেন।
নৌকা ডুবিতে প্রাণে রক্ষা পাওয়া এক নারী বলেন, ‘আমরা খুবই মর্মাহত। আমাদের অন্তত ২০ জন বন্ধু এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।’
তিনি কাঁদছিলেন।
সৈকত থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূর থেকে নৌকাটিকে দেখতে পাওয়া যায়। কোস্টগার্ডের ডুবুরিরা নিখোঁজদের সন্ধানে সেখানে তল্লাশী চালিয়ে যাচ্ছে।
মিলিটারি পুলিশ মৃতদেহগুলোকে ব্যাগের মধ্যে ভরে মর্গে পাঠাচ্ছে।
![](https://agrasor.com/wp-content/uploads/2024/04/970-x-90-px-2-1-2.jpg)
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।