স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিবাসীদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অপরিসীম অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিকাশমান অর্থনীতিতে অভিবাসীগণ অন্যতম সহায়ক শক্তি। তারা কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়ে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করছে। অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও স্বার্থ সংরক্ষণ, তাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ ও গতিশীল করতে সরকার বিভিন্নমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অভিবাসীগণ সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবেন এ প্রত্যাশা করছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, অভিবাসীদের কল্যাণে সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩ প্রণয়ন করেছে। অভিবাসী কর্মীদের স্বার্থরক্ষা ও অধিকতর সেবা প্রদানের জন্য বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইং-এ অধিক সংখ্যক জনবল পদায়ন করা হয়েছে। নতুন নতুন মিশন খোলা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ডাটাবেজ প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিদেশগামী প্রত্যেক কর্মীকে ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ বায়োমেট্রিক ডাটাসমৃদ্ধ ‘স্মার্টকার্ড’ প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রবাসী নারী কর্র্মীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত হওয়ার ফলে নারী কর্মীদের বিদেশে যাওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে গত সাত বছরে বিদেশে ৩৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫২৩ জন লোকের চাকরি হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অভিবাসীদের কল্যাণে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ব্যাংক থেকে অভিবাসী কর্মীরা সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণ করতে পারছেন। প্রবাসীদের মূল্যবান রেমিটেন্স পাঠানোও সহজ, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্র্যমোচনের ক্ষেত্রে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিদেশে কর্মরত কর্মীদের এবং দেশে অবস্থানরত তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করার মধ্যেই এ দিবসের তাৎপর্য নিহিত। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পাশাপাশি তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিদেশে শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও সম্প্রসারণ,উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী সৃষ্টি,অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আরও বেশি নিবেদিত হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, অভিবাসী কর্মীদের মর্যাদা প্রদান, তাদের অধিকার সংরক্ষণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর ১৮ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ পালন করে আসছে। বাংলাদেশও প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের সার্বিক সাফল্য কামনা করে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসে কর্মরত সকল বাংলাদেশী অভিবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।