অগ্রসর প্রতিনিধি :সরকার ২০২০ সালের মধ্যে একটি বাড়ি একটি খামার (ওএইচওএফ) প্রকল্পের অধিনে আরো ১ কোটি ৮০ লাখ লোককে দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
প্রকল্প পরিচালক আকবর হোসেন বলেন, সরকারের বিশেষ বরাদ্দ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সরকার এ লক্ষ্য অর্জন করবে।
এই প্রকল্পের প্রথম দুই ধাপে দেশের ৬৪টি জেলার ৪৮৫ টি উপজেলার ৪০ হাজার ৫’শ ২৭টি গ্রামের ২২ লাখ পরিবারের প্রায় ১ কেটি ৫০ লাখ অতিদরিদ্র লোককে দারিদ্র্যমুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, এই প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে সারাদেশে ৬০ হাজার ৫১৫ টি গ্রামের ১ কোটি ৮০ লাখ দরিদ্র লোককে স্বাবলম্বী করে তুলতে সহায়তা দেয়া হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ কোটির লোক দারিদ্র্যমুক্ত হবে।
অফিস সূত্র জানায়, প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের জন্য সরকার ৮ হাজার ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মোট বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ অনুদান হিসাবে দেয়া হবে। অবশিষ্ট টাকা প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহায়তা হিসাবে ব্যয় করা হবে। সরকার প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের জন্য ৩,১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।
এই প্রকল্পের অধীনে সারাদেশে প্রতিটি গ্রামে ৬০ জন দরিদ্র লোককে নিয়ে গ্রাম উন্নয়ন সমিতি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ২০ জন নারী। গ্রাম সংগঠনগুলো গঠনের পর সমিতির সদস্যরা প্রতিমাসে দুই’শ টাকা করে সঞ্চয় শুরু করেন। এতে প্রত্যেকের নামে বছরে ২ হাজার ৪০০ টাকা সঞ্চয় হয়। পাশাপাশি সরকার অনুদান হিসাবে প্রত্যেক পরিবারকে ২ হাজার ৪০০ টাকা করে দেয়। এতে একজন সদস্যের বছরে মোট ৪ হাজার ৮০০ টাকা জমা হয়। বছর শেষে ব্যাংকের বার্ষিক মুনাফাসহ প্রত্যেকের প্রায় ৫ হাজার টাকা মূলধন হবে।
পাশাপাশি সরকার ঘুর্ণায়মান মূলধন হিসেবে প্রতিটি গ্রাম উন্নয়ন সমিতিকে অনুদান হিসাবে বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেবে। এই টাকা তাদের ব্যাক্তিগত সঞ্চয় ও সরকারের কাছ থেকে পাওয়া বোনাসের সাথে যোগ হবে। এভাবে বছরে একটি সমিতির মোট মূলধন হবে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
আকবর হোসেন বলেন, আমরা ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে তাদের স্থায়ী মূলধন গড়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমিতির সদস্যদের কৃষি, নার্সারি, মৎস্য, পোল্ট্রি ও পশু পালনের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ নেয়ার পর মাত্র ৮ শতাংশ সুদে সমিতির তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে তারা নিজস্ব উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সমিতির সদস্যরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও ব্যবসা শুরু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সপ্তাহে একদিন করে সন্ধ্যায় বৈঠক করেন।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, এই প্রকল্প এরইমধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর দেশে অতি দরিদ্রের হার কমে ১২.৯ শতাংশ হয়েছে। ২০০৯ সালে এই প্রকল্প শুরু হওয়ার আগে এই হার ছিলো ২২ শতাংশেরও বেশি।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।