অগ্রসর রিপোর্ট : রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেইট সংলগ্ন হোটেল স্টার থেকে উদ্ধার হওয়া লাশটি তরুণী তানিয়ার। পুলিশের ধারণা, তিনি ইয়াবা সিন্ডিকেটের কবলে পড়েই খুন হয়েছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই জিয়াউর রহমান বলেন, দ্রুত-ই মামলার রহস্য উদঘাটন হবে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতরে যেতেই গেটের কাছেই হোটেল স্টার। দীর্ঘদিন ধরেই অসামাজিক কার্যকালাপের নিরাপদ স্থান হিসেবে আবাসিক এ হোটেলটি ব্যবহার হয়ে আসছে বলে অভিযোগ আছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন রোববার সন্ধ্যার দিকে এলাকার ইয়াবা সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আলমগীর, জামান ও নাঈম নামে তিন যুবক তানিয়াকে নিয়ে হোটেলে যান। হোটেলের নিয়ম মতো নাম ঠিকানা রেকর্ড করার কথা থাকলেও এর কোনটিই করা হয়নি। শুধুমাত্র পরিচয়ের খাতিরে তাদের একটি রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরপর নাঈম, জামান ও আলমগীর সারারাত মেয়েটিকে নিয়ে ওই রুমে অবস্থান করে ভোরের দিকে চলে যান। সকালের দিকে হোটেলের এক স্টাফ গিয়ে দেখেন ওই রুম তালাবদ্ধ। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পর দরজা না খুললে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশে খবর দেওয়ার পরপরই হোটেলের ম্যানেজারসহ অন্যরা গা ঢাকা দেন। পুলিশ গিয়ে রুমের তালা ভেঙ্গে ভেতরে তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরে অজ্ঞাত হিসেবে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
এদিকে, ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এর কোন ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। এমনকি যারা ওই তরুণীকে হোটেলে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের বা হোটেল মালিক-কর্মচারীদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। এখনো তরুণীর পরিচয় পায়নি পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ওই তরুণীর নাম বা তার ঠিকানা তারা পাননি। তবে যারা ওই তরুণীকে হোটেলে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের নাম জানতে পেরেছেন। তারা হলেন- নাঈম ও আলমগীর। এদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, হোটেলের মালিক-কর্মচারীরা পলাতক। এ কারণে তাদেরও গ্রেফতার করা যাচ্ছে না।
এসআই জিয়া বলেন, ওই নারী যদি আত্মহত্যাই করবেন, তবে হোটেলে গিয়ে আত্মহত্যার কোন কারণ নেই। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা অনুমান করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাঈম পলাতক বলেই গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, নিহত তরুণীর নাম তানিয়া। তবে তার বাড়ি কোথায় সে ব্যাপারে কিছুই জানা যায় নি। অন্য এক আবাসিক হোটেলের এক স্টাফ জানান, এর আগেও নাইম, আলমগীর ও জামানের সঙ্গে ওই তরুণী এই হোটেলসহ বসুন্ধরার আবাসিক হোটেল হ্যাভেন টাচ, পার্ক ও কুড়িলের শিকদার হোটেলে যাতায়াত করতেন। ওই সময় তারা মেয়েটিকে তানিয়া নামে ডাকতে দেখেছেন। সেদিনও তারা এক সঙ্গে হোটেল স্টারে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাইম, জামান ও আলমগীর এ এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অন্যতম নেতা। বিশেষ করে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বারিধারা, নর্দা, কুড়িলসহ আশপাশের এলাকায় ইয়াবার ডিলার হিসেবে পরিচিত। প্রশাসনের সঙ্গে এদের একপ্রকার সখ্যতার কারণে এলাকায় তারা বেপরোয়া।