সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে ৭ বছরের স্কুল ছাত্রকে অটোরিক্সা চাঁপায় মাথা থেতলে দিয়ে হত্যা করে বৃহস্পতিবার রাতে পালিয়ে গেল ঘাতক চালক। জেলার তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের মাণিগাঁও গ্রামের ছাবির উদ্দিনের ছেলে ও মাণিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র সাইজ উদ্দিনের এ অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ইফতারির পর সহাপাঠিদের নিয়ে বাড়ির সামনে সড়কের এক পাশে খেলাধুলা করার সময়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার মাণিগাঁও গ্রামের ছাবির মিয়ার ৭ বছরের শিশু সন্তান সাইজ উদ্দিন বৃহস্পতিবার ইফতারির পর বাড়ির সামনের সড়কের পশ্চিম পার্শে^ সহপাঠিদের নিয়ে খেলাধুলা করার সময়, উওর দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা বাদাঘাটগামী একটি ব্যাটারি চালিত যাত্রীবাহি অটোরিক্সা তাকে চাঁপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে সাইজ উদ্দিনের মাথার দু’পাশ থেতলে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
ওই সময় চালক উপজেলার উওর বাদাঘাট ইউনিয়নের মোঁদেরগাঁও গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া বেপরোয়া গতিতে যাত্রীবাহি অটোরিক্সাটি চালিয়ে বাদাঘাট বাজারে যাবার পথে সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় সাইজ উদ্দিনসহ আরো কয়েকজন শিশুকে চাঁপা দিয়ে অটোরিক্সা ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় সাইজ উদ্দিনের মাথা থেতলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মুখে ঘটনাস্থলেই সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
অটো রিক্সা থাকা যাত্রীরাও অবস্থা বেগতিক দেখে নেমে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অটোরিক্সাটি জব্দ করে রাত সাড়ে ১২টায় লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘাতক চালকের পরিবারের লোকজন পুরো ঘটনাটিকে ধামাচাঁপা দিতে ঘটনার পর থেকেই মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অনেকটা আর্থিক প্রলোভেনের মুখে নিহতের পিতা ও থানা পুলিশকে বশে আনার কৌশলও অব্যাহত রেখেছেন।
নিহত সাইজ উদ্দিনের পিতা ছাবির মিয়া বলেন, বাবা আমার ছেলে মারা গেছে তাকে তো আর ফিওে পাব না, তাই সবাই বলছে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে মিটমাট করে ফেলতে, আমি গরীব মানুষ থানা পুলিশে চালকের নামে অভিযোগ করেই বা কী করবো?
তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই অজয় চন্দ্র দাস জানান, ঘটনাস্থল থেকে আলমত হিসাবে অটোরিক্সাটি জব্দ করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। যতদুর জানতে পেরেছি অটোর কোন বৈধ কাগজপত্র নেই বা চালকের কোন প্রকার লাইসেন্স নেই, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। লাশ জেলা সদর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর বলেন, এ ব্যাপারে নিহতের পিতা ছাবির মিয়া অজ্ঞাত নামা চালককে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলেও যেহেতু অটোরিক্সাটি জব্দ করা হয়েছে সেক্ষেত্রে পুলিশ ঘাতক চালককে শীঘ্রই সনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার সব রকম পুলিশী চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।