নতুন আদেশে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের আদেশে ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান থেকে ৯০ দিনের মধ্যে কোনো অভিবাসী আমেরিকায় যেতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরাকের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে নতুন আদেশে এ দেশটিকে সে তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, নতুন আদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১২০ দিন করা হয়েছে এবং ১৬ মার্চ থেকে তা কার্যকর হবে। তবে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যারা স্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস করছেন কিংবা গ্রিন কার্ড রয়েছে তারা এর আওতায় পড়বেন না। কিন্তু আগের আদেশে গ্রিন কার্ডধারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছিল। ফলে নানা রকম দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা দেয় এবং বিমানবন্দরগুলোতে মারাত্মক রকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
নতুন আদেশ অনুসারে, যেসব মানুষ ২৭ জানুয়ারির মধ্যে ভিসা পেয়েছেন তাদেরকে আমেরিকায় প্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে। এছাড়া, দ্বৈত নাগরিকদের জন্যও এ আদেশ কোনো প্রভাব ফেলবে না। ২৭ জানুয়ারি প্রথম আদেশ জারি করা হয়েছিল।
পরিবর্তিত আদেশের বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্স, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক মন্ত্রী জন কেলি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সোমবার সকালে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এতে সেশন্স বলেন, “কে আমাদের দেশে প্রবেশ করতে পারবে আর কে দেশের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর হবে তা নিয়ন্ত্রণ করা প্রতিটি দেশের মতো আমেরিকারও অধিকার রয়েছে।” মার্কিন ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন বা এফবিআই’র তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৩০০’র বেশি ব্যক্তি সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে তদন্তের আওতায় রয়েছে।
জন কেলি বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ভ্রমণ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছিল। তিনি বলেন, “আমাদের শত্রুরা আমাদের স্বাধীনতা ও উদারতাকে অপব্যবহার করবে। কিন্তু আমেরিকা তার নাগরিকদের জীবন কেড়ে নেয়ার সুযোগ কাউকে দেবে না।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন বলেন, “নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তাকে জোরদার করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ আদেশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের জনগণকে নিরাপদ রাখার জন্য সঠিকভাবে তার দায়িত্ব পালন করছেন।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও নিয়ন্ত্রিত এ পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, এ আদেশ সন্ত্রাসী হামলা থেকে আমেরিকাকে রক্ষা করবে। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ ভিসা নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়া হয়েছে বলে যে সমালোচনা উঠেছে তিনি তা অস্বীকার করছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প আমেরিকায় মুসলমানদের প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেবেন বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভিসা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তিনি এখন সে প্রতিশ্রুতি পালন করছেন।
অভিবাসীদের অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো নতুন আদেশের পরিবর্তনগুলোকে খুবই অপর্যাপ্ত বলে মন্তব্য করেছে।