অগ্রসর রিপোর্ট : রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোসি হত্যা মামলায় ৫ জঙ্গির মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।
২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারী গ্রামে জাপানি নাগরিক কুনিও হোসি দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার ৪ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আবু সাঈদ নামে অপর এক আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রায়ে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মাসুদ রানা ওরফে মামুন, লিটন মিয়া, সাখওয়াত হোসেন, এসাহাক আলী ও এহছান উল্ল্যা আনসারী। এরমধ্যে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আনসারী পলাতক রয়েছে। অপর দুই আসামি নজরুল ইসলাম রাজশাহীতে এবং সাদ্দাম হেসেন ঢাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।
মঙ্গলবার সকালে কড়া পুলিশ পাহাড়ায় আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
এ রায়কে কেন্দ্র করে আদালত ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়ে পাঁচ আসামিকে আদালতে উপস্থিত করা হয়।
২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কাচু আলুটারী গ্রামে ৬৬ বছর বয়সি জাপানি নাগরিক কুনিও হোসি রিকশাযোগে তার খামারে যাওয়ার পথে গুলিতে নিহত হন।
এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
কুনিও হোসি হত্যাকান্ডের তদন্তকালে পুলিশ জঙ্গি সদস্য মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করে। তিনি হোসি কুনিওকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তার অপর সহযোগী মাসুদসহ অন্যান্যের নামও প্রকাশ করেন। তার দেয়া তথ্যানুযায়ি পীরগাছা উপজেলার মাসুদ রানা, একই এলাকার এছাহাক আলী , আবু সাঈদ, বগুড়া জেলার গাবতলী এলাকার লিটন মিয়া এবং গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা হলদিয়ার চরের সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি রথীশ চন্দ্র ভৌমিক জানান, এ মামলায় ৬০ কার্যদিবসে মোট ৫৭ জনের মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী ২০১৬ সালের ৩ জুলাই এ মামলায় জেএমবির ৮ সদস্যকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ৭ জুলাই আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
ওই বছরের ১৩ অক্টোবর কাউনিয়া আমলি আদালত-২ এর বিচারক আরিফুল ইসলাম শুনানি শেষে মামলাটি রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। পরে ২৬ অক্টোবর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবীর বিচারের জন্য মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করেন। একই বছরের ১৫ নভেম্বর শুনানি শেষে বিশেষ জজ আদালত সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।