তিনি বলেন, কোনো তথ্য না নিয়ে বিনিয়োগ করে অনেক বিনিয়োগকারী সব হারিয়ে ফেলে। এর জন্য সরকার ও অর্থমন্ত্রীকে দোষারোপ করা হয়। কিন্তু গুজবে বিনিয়োগ করে লোকসান করলে দায়ভাব নিজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা হুজুগে মাতাল। সব হারিয়ে হায় হায় করি। সেটা যাতে না হয়, তার জন্য শিক্ষা প্রয়োজন। আর সঠিক বিনিয়োগে সিদ্ধান্ত নিতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ শিক্ষা দরকার। বিএসইসির দেশব্যাপি ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি কার্যক্রমে তা পূরণ হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বাড়বে ও সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করে লাভবান হতে সহযোগিতা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পুঁজিবাজার যাতে আরো বিকশিত পারে, তার জন্য আমরা সব সময় সব রকম সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে রেখেছি। একটি স্থিতিশীল, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, শেয়ারবাজারে লেনদেন কারচুপি ও অনিয়ম শনাক্ত করতে যথাযথ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান করা হয়েছে। যেসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, তাতে লক্ষ করেছি পুঁজিবাজারে একটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, যেখানে বিনিয়োগ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানুন, ভালোভাবে খোঁজখবর নিন। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা ও আর্থিক বিবরণী জেনে নিন। কিছু না জেনে বিনিয়োগ করে সব হারাবেন, তারপর সব দোষ অর্থমন্ত্রী আর সরকারের, এটা যেন না হয়। ঝুঁকিটা বিনিয়োগকারীদের নিতে হবে। জেনে-বুঝে সঠিক জায়গায় সঠিক বিনিয়োগ করবেন।
বিএনপি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পুঁজিবাজারে বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর আমরা যখন সরকার গঠন করি, তখন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ওয়ান-ইলেভেনের আতঙ্ক এবং বিএনপি সরকারের লুটপাটের প্রভাব রয়ে যায়, দেশের মধ্যে এই অবস্থার পাশাপাশি তখন ছিল বৈশ্বিক মন্দাও। আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও গতিশীল করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং সঞ্চিত অর্থের সঠিক বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারার সক্ষমতা অর্জনে বিনিয়োগ শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগ কোথায় করবেন, কীভাবে করবেন এটা জানা একান্তভাবে দরকার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিভিন্ন কমিশনের প্রধান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা।