বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী।
পলাতক আসামি ইদ্রিসের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতন-ধর্ষণ এবং দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৪টি অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমের সঙ্গে ঋষিকেশ সাহা ও রেজিয়া সুলতানা চমন শুনানিতে অংশ নেন। আর পলাতক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসাবে শুনানি করেন গাজী এমএইচ তামিম।
রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশনের আনা ৪ অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে আসামি ইদ্রিস আলী সরদারের সাজা কার্যকর করতে হবে।
৪ অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে ২০০ জনকে হত্যা এবং দ্বিতীয় অভিযোগে বহু মানুষকে হত্যা, নারীদের নির্যাতনের ঘটনায় ইদ্রিস আলীর সর্বোচ্চ সাজার রায় এসেছে।
আর তৃতীয় অভিযোগে ৪ জনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার ঘটনায় তার আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং চতুর্থ অভিযোগে পরিকল্পিত দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় সাত বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি মাওলানা সোলায়মান মোল্যা ওরফে সোলায়মান মৌলভী গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ কারণে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২ আসামি একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ইদ্রিস তখন ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের স্থানীয় নেতা। আর সোলায়মান প্রথমে মুসলিম লীগ ও পরে জামিয়াতুল উলামায় ই-ইসলামীর নেতা ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তারা যে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, তা উঠে এসেছে এ মামলার বিচারে।
নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের মামলায় রায়ের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা যায়। তবে পলাতক ইদ্রিসকে সে সুযোগ নিতে হলে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ২৭টি মামলার ৪৬ আসামির মধ্যে মোট ২৮ মানবতাবিরোধী অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হলো।