রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য নতুন বিমান কেনার বিষয়টিও নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির জন্য নতুন বিমান কেনার মতো বিলাসিতা করার সময় আসেনি। তিনি বলেন, গরিবের ঘোড়ারোগ বলা হয় না! ঘোড়া পালতেও অনেক খরচ, সেটা আমরা চাই না। সাধারণ মানুষ যেটাতে চড়ে, আমরাও সেটাতেই চড়ব। নির্দিষ্ট কারও জন্য নয়, যাত্রীদের জন্যই বিমানকে আধুনিকায়নের গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিমানের উন্নয়নে তাঁর সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্দিষ্ট কারও জন্য নয়, যাত্রীদের জন্যই বিমান আধুনিকায়নের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, এক্সিডেন্ট তো হয়ই। ব্রাজিলে কী হলো। ফুটবল প্লেয়ারসহ প্লেন ক্র্যাশ করল। এক্সিডেন্ট, এক্সিডেন্টই। এটাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। নিজের জীবনের ওপর নানা হামলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তবে এক্সিডেন্ট যান্ত্রিক ত্রুটিতেও হতে পারে, আবার মনুষ্যসৃষ্ট কারণেও হতে পারে। তিনি আরও বলেন, যে দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, সপরিবারে হত্যা করা হয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয় না, মন্ত্রী করা হয়, সেখানে আর কী বলব?
বাংলাদেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন শেখ হাসিনা। এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, বিভিন্ন টক শোতে অনেকেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখতে পান। আপনি পান কি না? জবাবে তিনি বলেন, এখন আর মধ্য নেই, মধ্য পার হয়ে গেছে। আমরা ৩ বছর পার করছি। মধ্যবর্তী যদি বলেও থাকেন, সেটা পরবর্তীর বিষয়ে বলেছেন। তিনি আরও বলেন, স্বপ্ন দেখা ভালো।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে অফর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ওনার প্রস্তাব উনি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতিকে বলুক, তিনিই (রাষ্ট্রপতি) ব্যবস্থা নেবেন। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে কত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা হিসাব করে দেখুন। বিএনপি নেত্রী নির্বাচন করেননি। একটি দলের প্রধান হিসেবে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নির্বাচন থেকে বিরত থেকেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার (খালেদা জিয়া) নির্দেশে দেশব্যাপী মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। এখন তিনি প্রস্তাব দিচ্ছেন। আগে মানুষ হত্যার জবাব দেন, পরে প্রস্তাব নিয়ে কথা হবে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, তারা যখন নির্বাচনে জয়ী হয়েছে তখন ভালো, আর হারলেই ভালো না। নির্বাচনে অংশ নেবে না, বলবে ভালো না। খালেদা জিয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি চান ’৭২-এর পর থেকে যত পার্টি সংসদে ছিল, তাদের সবাইকে নিয়ে কথা বলতে। এর মাধ্যমেই তো তাঁর মনোভাব বোঝা গেল। তিনি আরও বলেন, যে স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তার প্রস্তাব নিয়ে তোলপাড়ের কী আছে?
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রসঙ্গে জানাতে চাওয়া হলে শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে বিশ্বনেতাদের আরও সোচ্চার হওয়া উচিত ছিল। মিয়ানমারে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে এসে বাংলাদেশে কেউ ঠাঁই পাবে না বলেও সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, সেখানে ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে নয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে বাংলাদেশে এসে কেউ আশ্রয় পাবে না। তিনি বলেন, আমি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনদের বলে দিয়েছি, তাদের কেউ যদি বাংলাদেশে ঢুকে থাকে, তাহলে তাদেরকে যেন গ্রেপ্তার করা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনে দূষণকারী দেশগুলোর অবস্থান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশগুলোর অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু সেভাবে হাত খোলেন না। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় সবার আগে নিজেদের উদ্যোগে তহবিল গঠনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন ভারত সফর নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর পানি বিষয়ে কথা হতে পারে।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।