অগ্রসর রিপোর্ট : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, অপরাধী যে দলেরই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সন্ত্রাসীর কোন দল নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধী যত শক্তিশালী হোক না কেন তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধে উজ্জীবিত হয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি দমনে পুলিশ যে সাফল্য দেখিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনাদের এ কৃতিত্বপূর্ণ অবদান শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনসেবাধর্মী পুলিশি ব্যবস্থা ধরে রাখার জন্য আপনাদেরকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
সভায় আইজিপি বলেন, মাদকদ্রব্যের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে পুলিশি তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাতে হবে। তিনি উপকূলীয় এলাকায় পুলিশ, র্যাব এবং কোস্ট গার্ডকে একত্রে মাদকদ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা চোরাচালান বন্ধের নির্দেশ দেন।
একেএম শহীদুল হক নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নিবিড়ভাবে তদারক, শিশু হত্যা, অপহরণ, শিশু ধর্ষণ মামলা নিয়মিত তদারক করার জন্য জেলার পুলিশ সুপারদের এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্যও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
আইজিপি সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেন। তিনি সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার ওপর জোর দেন।
সভায় জঙ্গি হামলা, অপহরণ, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচার, অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও বিষ্ফোরক উদ্ধার, সড়ক দুর্ঘটনা, গাড়ি চুরি, রাজনৈতিক সহিংসতা, অপমৃত্যু মামলাসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।
সভায় জানানো হয়, জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ৪৬ হাজার ৩৫০টি। সারাদেশে ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, দাঙ্গা, ধর্ষণ, অপহরণ মামলা গত কোয়ার্টারের (এপ্রিল, মে ও জুন) তুলনায় হ্রাস পেয়েছে।
অপরদিকে, একই সময়ে এসিড নিক্ষেপ, নারী নির্যাতন (ধর্ষণ ও এসিড ব্যতীত), শিশু নির্যাতন, গাড়ি চুরি সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে বিপুল সংখ্যক মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং ধ্বংস করা হয়েছে।
আলোচ্য কোয়ার্টারে মোটরকার, মাইক্রোবাস, জিপ, মোটর সাইকেল, বেবি ট্যাক্সিসহ বিভিন্ন ধরনের ৫১০টি গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সফল অভিযান পরিচালনা করে ২৫৪টি চুরি যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
সভায় এসবির অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মোঃ মোখলেসুর রহমান, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া, অতিরিক্ত আইজিপি (ফিন্যান্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট) ফাতেমা বেগম, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ আবুল কাশেম এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে সাবেক আইজিপি মোঃ ইসমাইল হুসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।