অগ্রসর রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে তথ্য প্রযুক্তিতে তার শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করে বলেছন, তার কাছেই প্রথম কম্পিউটার চালানো শিখেছি। আজও প্রতিনিয়ত শিখছি।
আজ বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতিহার ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করি।
তিনি বলেন, দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জনের বিষয় তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সবাই বলে পুরস্কার আমি পেয়েছি, আমি মনে করি, এ অর্জন বাংলাদেশের। বাংলাদেশের জনগণকে পরিপূর্ণ ডিজিটাল সেবা এনে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত বিকাশের বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালের মধ্যে আমরা ফোরজি নেটওয়ার্ক চালু করব। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে ইন্টারনেট চালু করায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা এগিয়ে চলেছি। কিন্তু এ স্বপ্ন পূরণের পথে যেন অনাকাঙ্ক্ষি বাধা না আসে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ইন্টারনেটের ফলে কিছু সাইবার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কেউ যাতে অপরাধ করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাওয়া ভবনকে ঘিরে যে ঘুষ বাণিজ্যের সৃষ্টি হয়েছিল, আমরা তা বন্ধ করেছি। তেমনি সাইবার অপরাধও বন্ধ করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ছেলেমেয়েরা যাতে হাতেকলমে ডিজিটাল প্রশিক্ষণ নিতে পারে সে জন্য দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। মানুষকে যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয় সে জন্য অনলাইনে ফরম জমা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছ। টেন্ডার বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে, এখন সরকারি টেন্ডার অন লাইনে আহ্বান করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। বই ডিজিটাল করা হয়েছে। কোরআন শরীফও অর্থসহ ডিজিটাল করা হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশ্বমানের করতে সারাদেশে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালের মধ্যে আরও ১০ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের আগে প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে এবং ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবহন চলবে।
আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস এবং এটুআই কর্মসূচি যৌথভাবে এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় সরকারি আইসিটি সেক্টরের নীতি নির্ধারকরাসহ সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। সাতটি দেশের ৭ জন মন্ত্রী আইসিটি সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্মেলনে উপস্থিত হন।
উল্লেখ, ঢাকায় ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড সম্মেলন আজ ১৯ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত। এবার এতে স্পন্সর হিসেবে অংশ নিচ্ছে মাইক্রোসফট। এ সম্মেলনে আয়োজিত ছয়টি সেমিনারে বক্তব্য দিতে ঢাকায় এসেছেন মাইক্রোসফটের উচ্চপদস্থ ৬ কর্মকর্তা।