অগ্রসর রিপোর্ট: সিরিয়ার কোবানে, মানবিজ ও পালমিরার মত গুরুত্বপূর্ণ শহর আইএস এর হাতছাড়া হয়ে গেছে; আলেপ্পো এবং ইরাকের মুসলে চলছে জোর লড়াই।
আইএস এর কথিত ‘খিলাফতে’র মধ্যে থাকা এক চতুর্থাংশ জায়গা গত দেড়বছরে তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে বলে গত জুলাইয়ে এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে আইএইচএস কনফ্লিট মনিটার, যারা সিরিয়া ও ইরাকের যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করে আসছে।
আইএইচএস এর বিশ্লেষকরা মানচিত্রের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে এক কোটি জন অধ্যুষিত এলাকা আইএসের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, এখন তা ৬০ লাখে নেমে এসেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ‘নৈরাজ্য’ ও ‘রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের’ সুযোগে সেখানে মাথাচাড়া দিয়েছিল আইএস।
২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকে হামলা চালানোর পর সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার ভেতরেই বেড়ে উঠে আইএস। এরপর দেশটির ভেতর অস্থিরতার সুযোগকে কাজে লাগানো শুরু করে তারা।
২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদবিরোধী একটি অংশ তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এর মধ্য দিয়ে তারা এটি বিপুল অস্ত্রভাণ্ডারের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে এবং সিরিয়ায় একটি নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পায়।
একই সময়ে ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাহিনী প্রত্যাহার করলে দেশটির শিয়া নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে সুন্নি জনগোষ্ঠীর তীব্র রোষ আইএসকে সুযোগ করে দেয়।
২০১৩ সালে তারা সিরিয়ার একটি বিরাট অংশ দখলে নেয়; তারপর নিজেদের নাম পরিবর্তন করে রাখে ‘ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ত (সিরিয়া)’। সংক্ষেপে যা দাঁড়ায় আইএসআইএস বা আইএসআইএল।
পরের বছর উত্তর ইরাকের মসুল শহর কব্জা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কাড়ে আইএস। উত্তর ও পশ্চিম ইরাকের বিরাট অংশ দখলে নেওয়ার পর ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদি।
ওই বছরই বাগদাদের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে ইরাকি কুর্দিশ সংখ্যালঘুদের উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় আইএস; ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার লোককে হত্যা করে, তাদের নারীদেরকে বানায় দাসী। এর মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে একটি আতঙ্কের রূপ নেয় আইএস।