সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের নতুন দেশ দিয়েছেন, আর এ নতুন দেশের অভ্যুদয়ের চেতনা আমরা পেয়েছি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবনে প্রবলভাবে উপস্থিত।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে দু’দিনব্যাপি ‘রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা-ভাবনা’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ যৌথভাবে এই এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখা।
সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশকে ভুল পথে হাটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে কেউ কেউ বিভ্রান্ত হয়েছে। আমরা এর শিকার হচ্ছি সাম্প্রতিক সময়ে। উল্টো পথে হাটার কারণে আজ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হামলা পরিচালিত হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা থেকে বিচ্যুৎ হওয়ার কারণেই এগুলো হচ্ছে।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, প্রযুক্তির এ যুগে ইন্টারনেট থেকে সবাই তথ্য সংগ্রহ করেছেন, জ্ঞান নয়। এর কারণে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এর ফলেই গুলশানের মতো ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শিক্ষায় মানবিকতা-ভ্রাতৃত্ব-নান্দনিকতার অভাব তৈরি হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় মানবিক বোধের জায়গা তৈরি করা না হলে দানব তৈরি হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি তার বক্তব্যে তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বাংলাদেশে) শিক্ষার প্রসারে রবীন্দ্রনাথের অবদান তুলে ধরেন।
ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. বরুণকুমার চক্রবর্তী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রবীন্দ্র চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
পিকিং ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. চাং শিঙ বলেন, রবীন্দ্র দর্শণ নতুন শতাব্দীর দিক নির্দেশনা দিচ্ছে।
টোকিও ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. মসাহিকো টোগাওয়া জাপানে রবীন্দ্র চর্চার বিষয়টি তুলে ধরেন।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন ও কবি আহমদ রফিককে রবীন্দ্র চর্চায় অবদান রাখার জন্য সম্মানিত করা হয়।
উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত হয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষের সভাপতিত্বে এ অধিবেশনে আলোচনা করেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখা, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাসাগর অধ্যাপক হিমবন্ত বন্দ্যেপাধ্যায়, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বেলা দাস, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সফিকুন্নবী সামাদী।
এছাড়াও সম্মেলন আয়োজক তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জাপান, চীন, ভারতসহ দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, প্রথিতযশা রবীন্দ্র গবেষকগণ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।