ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত একটি হনুমান কয়েক দিন ধরে খুলনার পাইকগাছা উপজেলা আদালত চত্বরে ঘুরছে। হনুমানটিকে আহত করার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাও হয়েছে।পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জি এম আবদুস সাত্তার গত ২৪ জুলাই জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটি করেন। সেটি আমলে নিয়ে বিচারক গাজী জামশেদুল হক প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে থানা-পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাইকগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দু-তিন মাস আগে থেকে পাইকগাছা সদরের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি কালোমুখো হনুমানকে দলবদ্ধ হয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। এদের মধ্যে দলছুট একটি হনুমানকে গত ৬ জুলাই কে বা কারা কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয় বাসশ্রমিকেরা হনুমানটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হনুমানটি ২০ জুলাই পাইকগাছা আদালত ভবনে আশ্রয় নেয়। এজলাস বন্ধ থাকার পরও সেটি আদালতের মধ্যে ঢুকে আধঘণ্টার মতো অবস্থান শেষে চলে যায়। পরদিন আবার আদালত চত্বরে এসে সে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে ঢোকে। সেখানে থাকা লোকজনকে বারবার নিজের ক্ষতস্থান দেখাতে থাকে। এ সময় হনুমানটির চোখ দিয়ে পানিও পড়ছিল। হনুমানটির এ অবস্থা দেখে আবদুল সাত্তার আদালতে মামলা করেন। গত সোমবার হনুমানটি আবার আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে যায়। এ সময় সেটি মামলার বাদীর টেবিলের ওপর কিছুক্ষণ শুয়েও থাকে। এতে সেখানে থাকা অন্য আইনজীবীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন।আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও মামলার বাদী আবদুল মজিদ বলেন, ‘হনুমানটি যেভাবে সবাইকে তার ক্ষতস্থান দেখাচ্ছিল, তাতে মনে হয়েছে সে বিচার চাইতে এসেছে। এ কারণে আমি মামলা করি। সোমবার দুপুরের দিকে সে আবার যখন আমার টেবিলে আসে, তখন কয়েকজন বাদাম, কলাসহ বিভিন্ন খাদ্য দিলেও হনুমানটি তা গ্রহণ করেনি।’ তিনি বলেন, দ্রুত হনুমানটির উন্নত চিকিৎসা দেওয়া দরকার। কারণ, তার ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ বের হচ্ছিল। কোনো কিছু খাচ্ছেও না। দুর্বল হয়ে পড়ায় সে যেকোনো সময় মারা যেতে পারে।
পাইকগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিন হনুমানটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর সে আদালত ও বিচারকের কার্যালয়ের আশপাশে বেশি ঘোরাঘুরি করছে। দেখে মনে হয়েছে, সে আসলে বিচার চাইছে। হনুমানটির চিকিৎসা চলছে।