উত্তরাঞ্চলীয় জেলা বগুড়ার চরাঞ্চলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির যৌথ অভিযানে একটি কলাবাগান থেকে কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই অভিযানে কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা আস্তানা পাওয়া না গেলেও জঙ্গিরা এসব অঞ্চল ব্যবহার করেছে, এমন কিছু আলামত তারা পেয়েছেন। বগুড়ার চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের এক সমাবেশে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির
আহমেদ জঙ্গিদের ব্যাপারে তথ্য দেয়ার জন্য ১০ লাখ পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।
ঢাকার গুলশানে রেস্টুরেন্টে এবং শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর এই প্রথম জঙ্গীবিরোধী বড় ধরণের অভিযান চালানো হলো।
চরাঞ্চলে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে র্যাবের কর্মকর্তারা বলেছেন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলার চর এবং ধুনট উপজেলার নিমগাছি এলাকা পড়েছে যমুনা এবং বাঙ্গালী নদীর মাঝে।
এই চরাঞ্চলে জঙ্গিদের আস্তানা এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে,এমন তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে র্যাব-পুলিশ-বিজিবি যৌথ অভিযান চালায়।
এই বাহিনীগুলোর প্রায় সাড়ে চারশো সদস্য অভিযানে অংশ নেয়।
বগুড়া থেকে র্যাবের কর্মকর্তা মো: সাহাব্বুদ্দিন খান বলেছেন, মূলত জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজেই তারা এই অভিযান চালিয়েছিলেন।
একদিকে অভিযান, আর অন্যদিকে জঙ্গি দমনের কর্মকাণ্ডে মানুষকে সম্পৃক্ত করার অংশ হিসেবে চরের নারীদের নিয়ে সমাবেশেরও আয়োজন করা হয়েছিল।
সেখানে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। বেনজির আহমেদ ঘোষণা করেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন থেকে কেউ ফিরে এসে অন্য জঙ্গিদের সম্পর্কে তথ্য দিলে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
এছাড়াও সাধারণ মানুষের কেউ জঙ্গিদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার পাবেন।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেছেন, জঙ্গি হামলাকারীরা এসব চরাঞ্চলেই প্রশিক্ষণ নিয়েছে- শোলাকিয়ায় হামলাকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা এমন তথ্য পেয়েছেন।
বগুড়ার চরাঞ্চলে যেখানে বড় ধরণের অভিযান চালানো হয়, সেখানকার একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ সরকার বলেছেন,অভিযানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা ব্যাপক কিছু পাওয়া যায়নি।
“চরে একটা কলা বাগান আছে, সেখান থেকে চারটা চাপাতি, তিনটা চাকু এবং কিছু জেহাদি বই পাওয়া গেছে। কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাওয়া যায়নি।”
তবে র্যাবের কর্মকর্তা মো: সাহাব্বুদ্দিন খান বলেছেন, জঙ্গিরা যে চরাঞ্চল ব্যবহার করেছে,তার চিহ্ন এবং আলামত রয়েছে।
ফলে চরাঞ্চলগুলোতে তাদের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
“জঙ্গিরা এসব চরে অবস্থান করেছিল, এমন লক্ষণ পাওয়া গেছে। কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছি। তার মধ্যে চাপাতি এবং গুলি এবং কিছু বেল্ট আমরা পেয়েছি। স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।”
ঢাকায় র্যাব এবং পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছেন, জঙ্গি দমনে যৌথ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
একইসাথে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন এবং সম্পৃক্ত করার জন্য গণসংযোগের কর্মসূচিও তারা চালাবেন।
সূত্রঃ বিবিসি