স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে বিশ্বাস করে যেখানে ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণী নির্বিশেষে সকলেই সমৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। এই লক্ষ্যে সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শারীরিক প্রতিবন্ধী থেকে সকল সদস্যের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সমতল ভূমিতে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রবৃত্তি বিতরণকালে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী সমতল ভূমিতে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত উন্নয়নে সরকারের সম্ভাব্য সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, সমতল ভূমিতে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকরা বাদ পড়ে যাওয়ায় এর আগে প্রকাশিত গেজেট সংশোধনের জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
সমতল ভূমিতে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বিশেষ কার্যক্রমের অধীনে এ ছাত্রবৃত্তি প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার এবং সিলেট, মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজু দেশোয়ারা বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকারের কথা নিশ্চিত করা সত্ত্বেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকেরা উপেক্ষিত হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কোন সরকার তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করেনি। এমনকি অনেক স্কুল তাদের শিশুদের ভর্তি করেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকরা বাংলাদেশের নাগরিক, তাই তারা সত্যিকার নাগরিক হিসেবে দেশে বসবাস করবে এবং সকল অধিকার ভোগ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর সরকার বিশেষ সহযোগিতা কার্যক্রম চালু করে। তবে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসায় সহযোগিতা কার্যক্রম চরম বাধার সম্মুখীন হয়।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় সহযোগিতা কার্যক্রম চালু করে। এই কার্যক্রমের আওতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে অথনৈতিকভাবে উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর সরকার তৃণমূল পর্যায়ে সুবিধাবঞ্চিত জনগণের অবস্থার উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে যোগ্য নাগরিক ও দক্ষ পেশাদার হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে শিক্ষাবৃত্তি প্রাপ্তদের নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকদের টেকসই উন্নয়নের জন্য তাঁর সরকারের গৃহীত উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অথনৈতিক কার্যক্রমে গতি সঞ্চার হয়েছে। এতে এ অঞ্চলের জনগণের জন্য সুযোগ-সুবিধা বয়ে নিয়ে আসছে।
এ বছর ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২০ জন শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেছে।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।