
সরকারের রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি হরিলুট আর মহাদুর্নীতির কারণেই মানুষের ঈদুল ফিতরের শেষ হাসিটুকুও বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই পরিবার স্বজন-শুভাকাঙ্খীদের নিয়ে উপভোগ করেন। কিন্তু এবছরেও আবার জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র কেড়ে নেয়ায় জনজীবনের এই উৎসব ম্লান হয়ে গেছে। ঈদে আনন্দ উদযাপনের বিপরীতে মুখ লুকিয়ে কাঁদছেন মধ্যবিত্ত মানুষেরা। সমাজে তৈরি হয়েছে ধনী ও গরীবের বিশাল ব্যবধান। অধিকাংশ মানুষের সামান্য প্রয়োজন মিটানোই যেন দুঃস্বপ্ন।
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
রিজভী বলেন, দেড় যুগ ধরে এক নিষ্ঠুর সরকারের দুঃশাসনের ছোবলে নেমে এসেছে নৈরাজ্যের এক ঘন অন্ধকার। দ্রব্যমূল্যের চরম উর্ধ্বগতির কষাঘাতে জনজীবনে নিম্ন আয়ের মানুষের আর্তি শোনা যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টেনে বাজার সিন্ডিকেটের হোতাসহ সরকারের আস্থাভাজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিবর্গ ব্যস্ত রয়েছে লুটপাট, দুর্নীতি ও বিরোধী মতকে দমন-পীড়ণে।
তিনি বলেন, ৬ বছরের বেশি সময় ধরে অসুস্থ অবস্থায় বিনা অপরাধে মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বন্দি রাখা হয়েছে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে। তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসা অতীব জরুরি। অথচ সরকার গায়ের জোরে গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। এই ঈদও পরিবার ছাড়া বন্দি অবস্থায় তাকে পালন করতে হবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এবারের ঈদ যাত্রায় কেবল ঢাকা ছাড়তেই ৯৮৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। বাসের টিকিটের দামও আকাশছোঁয়া। বাস পরিবহন খাত আপাদমস্তক অনিয়ম দুর্নীতির কারখানা। ঈদ উপলক্ষে চলছে সড়কে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি। শ্রমিকলীগ-ছাত্রলীগের কালোবাজারি টিকিটের ব্যবসা নামে চলছে লুটতরাজ। বিভিন্ন রুটে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট। অথচ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, ‘সড়ক-মহাসড়কে কোন যানজট বা হয়রানী নেই। এ যেন ডামি দায়িত্বশীলের মুখে দায়িত্বজ্ঞানহীন ইয়ার্কি তামাশার মন্তব্য।
রিজভী বলেন, ট্রেনে টিকিট পাচ্ছে না মানুষ। ট্রেনের টিকিট কাটার প্রক্রিয়াকে দিন দিন জটিলতর করা হচ্ছে। এতে নিম্ন-মধ্যম আয়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ ট্রেনে চড়ারই অধিকার হারিয়ে ফেলছে। বিমানের ভাড়া কল্পনাতীত।