বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সবখানেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে জিল্লুর রহমান মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটি।
মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য শুধু বাংলাদেশে বাড়ছে না, অন্যান্য দেশে আরও বেশি বাড়ছে। সারা বিশ্ব, সব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান স্বীকার করে নিয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির এই অবস্থার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
দল ও দেশের প্রতি জিল্লুর রহমানের অপরিসীম আনুগত্য ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১/১১ এর সময় যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়, তখন প্রধানমন্ত্রীকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাকে যখন কোর্টে নেওয়া হয় তখন সেখানে আমিও ছিলাম। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, জিল্লুর রহমানকে সভাপতি বানিয়েছি। তাকে অনেকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আপনি তার সঙ্গে থাকবেন। আর দল যাতে কোনোভাবে না ভাঙে।’
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৭ সালে আমরা বিপদের সময় একত্রিত ছিলাম। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ষড়যন্ত্র শেষ হয়ে যায়নি। বিএনপি-জামাত আমাদের পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘জিল্লুর রহমান ছিলেন মাটি ও মানুষের নেতা। তার নম্রতা ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি কোনও কিছুই জাহির করতেন না। যা করতেন কর্তব্যের তাগিদে করতেন। যখন নেত্রীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলো, তখন জিল্লুর রহমানের সঙ্গে আমরা কাজ করতাম। তখনই তিনি বলেছিলেন, আন্দোলনটা করতে হবে।’
জিল্লুর রহমানের মতো মানুষ বারবার আসে না উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘তিনি বিরল গুণসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা ছিল তার মধ্যে। তিনি উচ্চ কণ্ঠে কথা না বললেও একটা সভায় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারতেন। তার এই জিনিসগুলো আমাদের শেখা উচিত।’
সভায় ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জিল্লুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জিল্লুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধিকারের আন্দোলনের প্রত্যেকটি স্তরেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে গেছেন। তার মতো নেতার আদর্শ যুগ যুগ উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ জানান, ‘জিল্লুর রহমান খুবই ধীরস্থির প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা বিশ্বাস করে যখন দলের দায়িত্ব তার হাতে দিলেন, তখন তিনি দলের ক্ষতি হবে এমন কিছুতে একটুও প্রশ্রয় দেননি।’
জিল্লুর রহমান মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির সভাপতি এম এ করিমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মশিউর আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত
ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, সহ সভাপতি ডাঃ দিলীপ রায়, সাবেক এমপি অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, জয় বাংলা সাংবাদিক মঞ্চের সভাপতি জয়ন্ত আচার্য, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, জিল্লুর রহমান মৃত্যু বার্ষিকী পালন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন মশিউর আহমেদ, রোকন উদ্দিন পাঠান প্রমুখ।