অগ্রসর রিপোর্ট :আগামীকাল ২১ শে ফেব্রুয়ারি, দিনটি মহান শহীদ দিবস বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন। ভাষা শহীদদের স্মৃতি ধারণ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে শহীদ মিনার।
আমাদের জাতীয় জীবনের অন্যতম অবিচ্ছেদ্য অংশ শহীদ মিনার। বাঙালি জাতির মনের গভীরে স্থান এই মহামূল্যবান স্থাপনার। এখানে জাতির সূর্য সন্তানদের স্মরণ করা হয় বিশেষ এই দিনে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত শহীদ মিনার।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় দেয়ালে নতুন রঙ করা হয়েছে। দেয়ালে রঙ-তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আল্পনা। লেখা হয়েছে ভাষা আর দেশের কথা। শোভা পাচ্ছে ভাষা আন্দোলনের নানা গান, কবিতা ও স্লোগান। অন্যদিকে শহীদ বেদিসহ গোটা এলাকা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কারের কাজ করছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় প্রবেশের মুখেই দেখা যায় মো. ওলিউল্লাহ নামের একজন দেয়াল রঙ করছেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ ধরে কাজ করছি। এরই মধ্যে কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগের কাজের উপর দিয়ে আজ শুধু প্রলেপ দিচ্ছি। বিকাল ৫টার মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করবো।
রঙ করা হয়েছে মূল বেদিসহ সংলগ্ন এলাকা। গত রাতে মূলবেদিতে আল্পনা করা হয়। সকালে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মী মূলবেদি ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন। কথা হয় পরিচ্ছন্নকর্মী ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে কাজ করছি। আমাদের কাজের তদারকি করছে নগর গণপূর্ত বিভাগ। মূলবেদিতে গত রাতে আল্পনা করা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইউনিফর্মে পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য ছাড়াও সাদা পোশাকের বিভিন্ন গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রস্তুতির দায়িত্বে আছেন নগর গণপূর্ত বিভাগ। নগর গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির সারাক্ষণকে বলেন, শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রস্তুতির দায়িত্বে আছে নগর গণপূর্ত বিভাগ। ফেব্রুযারির শুরু থেকে আমরা কাজ করছি। আমাদের প্রস্তুতি শেষ।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সার্বিক দায়িত্বে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে। ঐতিহ্য বজায় রেখে একদিকে রাষ্ট্রীয় দিবস অনুসরণ করছি। অন্যদিকে করোনার বিষয়টা মাথায় রেখে কাজ করছি। শহীদ মিনার এলাকায় মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি সংগঠনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দুইজন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এ নিয়ম মেনে সবাই শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।