অগ্রসর রিপোর্ট : ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে করোনার টিকা সরবরাহ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) অন্যান্য রাজ্যের ন্যায় পশ্চিমবঙ্গেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে টিকা। আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশটিতে শুরু হচ্ছে গণটিকাকরণ।
এদিকে কোভিড ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ, নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশ। এমনকি কোভিশিল্ড চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টও। তাদের কবে কোভিড প্রতিষেধক পাঠানো হবে, মঙ্গলবার সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
তিনি জানান, কোভিড ভ্যাকসিনকে এখনই বাজারজাত করা হচ্ছে না। শুধুমাত্র জরুরি ব্যবহারের ভিত্তিতে প্রতিবেশী দেশের সরকারকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। তাও সীমিত সংখ্যক ডোজ পাঠানো হবে। কিন্তু কবে পাঠানো হবে প্রতিষেধক, প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেছেন, দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হোক। তারপরেই প্রতিবেশী দেশে কোভিড প্রতিষেধক পাঠানোর পরিকল্পনা স্পষ্ট করবে কেন্দ্র। তবে কথা মতোই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা পৌঁছে দেবে ভারত।
উল্লেখ্য কোন দেশে কত টিকা কীভাবে পাঠানো হবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। দেশে টিকাকরণ শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিবেশী দেশগুলিকে কোভিড ভ্যাকসিন পাঠানো শুরু হতে পারে বলে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন ভারতে টিকাকরণ শুরু হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেশি দেশে অক্সফোর্ডের টিকা পাঠানো হবে। সেই হিসাবে আগামী দুই/তিন সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ টিকা পাবে।
প্রসঙ্গত, সেরাম ইন্সটিটিউটের কাছে তিন কোটি ভায়াল কোভিশিল্ড চেয়েছে বাংলাদেশ। ১ কোটি ২০ লাখ ভায়াল ভ্যাকসিন চেয়েছে নেপাল। জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ টিকা চেয়েছে ব্রাজিল। প্রতিষেধক চেয়ে আবেদন করেছে ভূটান. মায়ানমারের মতো প্রতিবেশি দেশগুলিও। এদিকে সেরাম ইনস্টিটিউটকে ১ কোটি ১০ লাখ ভায়াল কোভিশিল্ডের বরাত দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। যা ১৪ জানুয়ারির মধ্যে সরবরাহ করতে হবে। উল্লেখ্য, বিশ্বের কোনও ভ্যাকসিনই খোলা বাজারে বিক্রি শুরু হয়নি। শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে কোভিড ভ্যাকসিন খোলা বাজারে বিক্রির বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এদিকে করোনা টিকা কোভিশিল্ডের ৭ লাখ ডোজ নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের মাটি ছুঁয়েছে স্পাইসজেটের বিমান। মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টা নাগাদ টিকা এসে পৌঁছায় পশ্চিমবঙ্গে। বিমানবন্দরে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা ছিল ইনসুলেটেড ভ্যান। সেই টিকা ইনসুলেটেড ভ্যানে করে বাগবাজারের সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওখানেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকছে টিকা। এই মেডিকেল স্টোর থেকেই বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে সেগুলো। ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। টিকা নিয়ে দেশ জুড়ে যেমন আশার পারদ চড়ছে। তেমনই এ রাজ্যেও টিকা নিয়ে উৎসাহের অন্ত নেই। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথমে চিকিৎসক এবং সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে দেওয়া হবে এই টিকা। তারপর টিকা দেওয়া হবে পুলিশদের।