অগ্রসর রিপোর্ট : ‘প্রথম পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আসবে সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের বাইরেও থাকবে সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ।’ এমনটাই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি। স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট দিবে অক্সফোর্ড আস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন। আর বৈশ্বিক প্লাটফর্ম গাভি-র (টিকা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট) কাছ থেকে পাবো মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য ভ্যাকসিন। এভাবে ব্যবস্থা হবে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের করোনা ভ্যাকসিন।’
অন্যদিকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন আওতার বাইরে থাকবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘১৮ বছরের নিচে যারা আছে তারা ভ্যাকসিন পাবে না। এদের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। পৃথিবীর কোথাও এদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে না এবং ট্রায়ালেও রাখা হয়নি। গর্ভবতী প্রায় ৩৫ লাখ মা ও যারা জটিল রোগে ভুগছেন তারা ভ্যাকসিন পাবেন না। এছাড়া দেশের এক কোটি মানুষ প্রবাসে থাকেন তারাও ভ্যাকসিন আওতার বাইরে থাকবেন। এভাবে সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে না।’
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে মহাখালীতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে ভ্যাকসিন ল্যাব পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরো বলেন, ‘এখন যাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে এই সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। যারা পাবেন না তাদের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ কোটি। তাহলে গ্যাপ বেশি থাকছে না। যারা থাকছেন তাদেরও পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে প্রায় বছর খানেকের মতো।’
তিনি আরো বলেন, ‘কোভিড ভ্যাকসিন বিষয়ে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ক্রয় চুক্তি করেছি। ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য অর্ডার পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করি ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ভ্যাকসিন আমরা পেয়ে যাবো। প্রতিমাসে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন ২৫ লাখ মানুষকে দিতে পারবো। মে বা জুন মাসে গাভি-র (টিকা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট) ভ্যাকসিনও আমরা পাবো। ভ্যাকসিনের জন্য স্থানীয় প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। তাপমাত্রা অনুযায়ী সংরক্ষণ ও পরিবহনের ব্যবস্থা করেছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন আমরা স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে চেষ্ঠা করছি। কোভিড মহামারি মোকাবিলায় আমরা কাজ করছি। আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা দিচ্ছি। কোভিড মোকাবিলায় সাফল্যের জন্য আমেরিকার একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় বাংলাদেশ ২০ তম স্থানে রয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। এতে আমেরিকার অবস্থান ৪০ তম স্থানে। এক্ষেত্রে ভারত পাকিস্তান অনেক পিছিয়ে। সবার প্রচেষ্ঠায় আমরা এই অর্জন করতে পেরেছি। অনেকে বলেছে করোনা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি নেই। কিন্তু আজকে পৃথিবী স্বীকৃতি দিচ্ছে আমরা সফলভাবে করোনা মোকাবিলায় সক্ষম। যার কারণে আমাদের দেশে মৃত্যুর হার অনেক কম, সংক্রমণের হার অনেক কম, সুস্থতার হার প্রায় ৯০ শতাংশ।’
ভ্যাকসিন ল্যাব বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিনের দুটি অংশ রয়েছে। বায়োলজিক্যাল অংশ ও কেমিক্যাল অংশ। বায়োলজিক্যাল অংশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিয়েছে। কেমিক্যাল অংশটাও অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। এই ল্যাবে ভ্যাকসিন পরীক্ষা করে গুণগত মান যাচাই করা হয়। সাধারণত দেশে নয়টি ভ্যাকসিন টেস্ট করা হয়। ইতিমধ্যে কোভিড ভ্যাকসিনও যুক্ত হয়েছে।’