অগ্রসর রিপোর্ট : বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের সাফল্যের কারণে দেশ পোলিও মুক্ত হয়েছে, এবার হাম-রুবেলা মুক্তও হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালী বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্সের (বিসিপিএস) মিলনায়তনে হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২০ কর্মসূচী উদ্বোধন করার সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, শিশুদের আমরা দশটির মতো টিকা দিয়ে থাকি। টিকা দানের মাধ্যমে আমরা দেশকে পোলিও মুক্ত করতে পেরেছি। টিকা দানের সাফল্যের কারণে প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন হিরো খেতাব পেয়েছেন। এখন দেশকে হাম-রুবেলা মুক্ত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, টিকা স্বাস্থ্য খাতের অনন্য ব্যবস্থা। টিকা নিলে স্বাস্থ্যের ওপর চাপ কমে, অসুখ কম হয়। টিকার কারণে মানুষের আয়ুও বেড়েছে। দেশের ৯০ শতাংশ শিশুকে টিকার আওতায় আনতে পেরেছি। শিশুদের প্রতি আমাদের যত্নশীল হতে হবে। শিশুরা আমাদের প্রিয়জন, তাদের টিকা দেওয়া নিশ্চিত করার দায়িত্ব অভিভাবকদের। আমরা টিকা দেওয়ার মাধ্যমে শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে পারি।
মন্ত্রী করোনা মোকাবিলায় সাফল্য বিষয়ে বলেন, করোনাকালে বাংলাদেশের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। অর্থনীতি সচল রয়েছে। করোনাকালীন সময়ে এ যাবৎ কালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স অর্জিত হয়েছে। তিনি সমালোচকদের সমালোচনার পাশাপাশি প্রশংসা করারও আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান। সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। আরো উপস্থিত ছিলেন বিসিপিএসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসি অ্যান্ড এএইচ অপারেশন প্ল্যানের লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মাওলা বকস চৌধুরীসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিগণ।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো আব্দুল মান্নান বলেন, সর্বশেষ ২০১৪ সালে হাম-রুবেলা টিকা দেওয়া হয়েছিল। ছয় বছর পর হাম-রুবেলা টিকা দেওয়া হচ্ছে। এবার তিন কোটি ৪০ লাখ শিশু এই টিকা পাবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ছয় সপ্তাহব্যাপী চলবে এই টিকাদান কর্মসূচি। হাম নির্মূল ও রুবেলা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্যাম্পেইন চলাকালে সারা দেশে ৯ মাস থেকে ১০ বছরের নিচের প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ শিশুকে ১ ডোজ এমআর টিকা দেওয়া হবে। চলমান করোনা মহামারি বিবেচনা করে দেশে বিদ্যমান শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরিধান করা, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার পালন ও সঠিক পদ্ধতিতে হাত ধোয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক নিয়মাবলি যথাযথ প্রতিপালন সাপেক্ষে ক্যাম্পেইনটি পরিচালিত হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) ১৯৭৯ সাল থেকে শিশুদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।
ইপিআইয়ের অন্য লক্ষণগুলোর মধ্যে ২০২২ সাল নাগাদ জাতীয় পর্যায়ে হাম-রুবেলা টিকার কভারেজ শতকরা ৯৫ ভাগে উন্নতকরণ এবং ২০২৩ সাল নাগাদ হাম-রুবেলা দূরীকরণ অন্যতম। হাম-রুবেলা রোগ ও এর জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়ার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হলো সঠিক সময়ে শিশুকে হাম-রুবেলা (এমআর) টিকা প্রদান করা। নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে শিশুদের ৯ মাস ও ১৫ মাস বয়সে মোট ২ ডোজ এমআর টিকা প্রদান করা হয়ে থাকে।