অগ্রসর রিপোর্ট : ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রত্যাহারের প্রস্তাব সোমবার (২৭ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিধানসভায় তোলা হচ্ছে। একটি বিশেষ অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করবে ক্ষমতাসীন তৃণমূল। বিরোধী কংগ্রেস ও বাম শিবির থেকেও এই প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন ঘোষণা করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রতিবেশী তিন দেশ থেকে ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে আইন (সিএএ) সংশোধন করে ভারত। বৈষম্যমূলক এই আইনকে সংবিধানে বর্ণিত ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী বলে মনে করছে দেশটির নাগরিক সমাজ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এই আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। পরে কেরালা, পশ্চিমবঙ্গসহ আরও ৮টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তারা রাজ্যে সিএএ চালু করবেন না। ইতোমধ্যে দেশটির কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থানে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে।
গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ প্রত্যাহার সংক্রান্ত প্রস্তাব বিধানসভায় তোলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সিপিআইএম ও কংগ্রেস সম্মিলিতভাবে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব উত্থাপনের চেষ্টা করেছিল। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী আপত্তি করলেও এখন তিনি প্রস্তাব আনার পক্ষেই মত দিয়েছেন। বাম ও কংগ্রেস ‘নীতিগতভাবে’ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
মমতা সোমবার শিলিগুঁড়ি যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেছেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে সকলের আগে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাই প্রস্তাব পাস করেছে। এদিকে জনগণনা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায় গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার তারাপীঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, এনআরসি হচ্ছে না বাংলায়। তবে সিএএ হবে। এটা পরিষ্কার। এখন যারা ভ্রান্ত প্রচার করছেন, তারা ভুল করছেন, অন্যায় করছেন, ভারতের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।’ তবে মুকুল রায়ের ওই মন্তব্য নিয়ে তার নিজ দলেও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রয়েছে। এ কারণে মুকুল রায়ের এই মন্তব্যকে আস্থায় নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস ও বাম দল। তাদের কথা, এনআরসি নিয়ে বিজেপি মিথ্যা প্রচার করছে। আন্দোলন বন্ধ করার নতুন ফন্দি করছে।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিজেপি বুঝেছে মানুষ আর সিএএ, এনআরসি, এনপিআর চায় না। এই রাজ্যে ধর্মীয় বিভাজন চায় না। ওরা সকালে এক কথা বলে, দুপুরে আরেক কথা, আবার রাতে বলে অন্য কথা। ওদের কথা মানুষ বিশ্বাস করছে না।’